বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারত একটি কৃষিপ্রধান দেশ। পাশাপাশি, দেশের প্রতিটি প্রান্ত জুড়েই বিপুল হারে কৃষিকাজ পরিলক্ষিত হয়। এছাড়াও, দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ পেশাগত ভাবে কৃষিকার্যের ওপরেই নির্ভরশীল। এমতাবস্থায়, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রথাগত ভাবে কৃষিকাজ না করে সেখানে নিত্য-নতুন উদ্ভাবন বর্তমানে ব্যাপক হারে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
পাশাপাশি, করোনার মত ভয়াবহ মহামারীর ফলে লকডাউনের পরে, যখন প্রতিটি ক্ষেত্রই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী “স্বনির্ভর ভারত”-এর প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করেন। সেই রেশ বজায় রেখেই আজকাল এমন অনেক মানুষের কাহিনি সামনে আসছে, যারা স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সৃজনশীলতাকে এক অনন্য রূপ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যেই অন্যতম একজন হলেন বিহারের সারান জেলার বারেজা গ্রামের সুনীতা প্রসাদ।
সুনীতা মাত্র দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও আজ তিনি বাড়িতেই মাশরুম থেকে শুরু করে অন্যান্য সবজি চাষ করে সেগুলি বিক্রির মাধ্যমে ভালো অঙ্কের অর্থ উপার্জন করছেন। বাড়ির উঠোনে ও বারান্দায় শাক-সবজি ও ফুল চাষ করছেন তিনি। তাঁর অভিনব চাষের পদ্ধতির জন্য তিনি ইতিমধ্যেই ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডেও ভূষিত হয়েছেন।
মূলত ছোটবেলা থেকেই শাক-সবজি চাষের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন সুনীতা। ভাঙা কোনো পাত্র পেলেই তাতে মাটি যোগ করে নতুন নতুন সবজি চাষ করতে থাকেন তিনি। তারপর তিনি বিভিন্ন পাইপেও মাটি দিয়ে পছন্দমত গাছ লাগাতে শুরু করেন।
যদিও, তাঁর এই কাজে পরবর্তীকালে তাঁকে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করতেন সুনীতার স্বামী। এরপর তাঁরা দু’জনেই পাইপের মাধ্যমে তা মাটি দিয়ে ভরাট করে গাছ লাগাতে থাকেন। ধীরে ধীরে উৎপাদনও বাড়তে থাকে নতুন এই পদ্ধতিতে। বেগুন, মাশরুম, বাঁধাকপি সবকিছুই ফলতে শুরু করে ঐভাবে।
ধীরে ধীরে সুনীতার এই সৃজনশীলতা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে। এমনকি, একটা সময়ে পাইপের খরচ কমাতে তিনি বাঁশের তৈরি পাইপ দিয়ে পরীক্ষা শুরু করেন। আর সেখানেও চূড়ান্তভাবে সফল হন সুনীতা। পাশাপাশি, কমে যায় চাষের খরচও।
এই প্রসঙ্গে সুনীতা জানিয়েছেন যে, প্রথমে তিনি পোল্ট্রি ফার্ম খুললেও তাতে লোকসান হয় তাঁর। এরপর তিনি মাশরুম রোপণ শুরু করেন। এমনকি, তিনি পুসায় অবস্থিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণও নেন। এরপর বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করার ফলে ফলনও ভালো হতে থাকে। আর তার মাধ্যমেই বর্তমানে ভালো আয় করছেন সুনীতা দেবী।