বাংলা হান্ট ডেস্ক: বেশ কয়েকদিন ধরেই মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস (Sunita Williams) তাঁর সঙ্গী ব্যারি উইলমোরের সাথে মহাকাশে রীতিমতো “আটকে” রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে তাঁর মিশন মাত্র ৮ দিনের থাকলেও মহাকাশযানের প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে তিনি এখনও মহাকাশ থেকে ফিরে আসতে পারেননি। জানিয়ে রাখি যে, গত ৫ জুন বোয়িং স্টারলাইনারের প্রথম উড়ানের মাধ্যমে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামসের (Sunita Williams) এই সফর শুরু হয়েছিল। কিন্তু স্টারলাইনারে হিলিয়াম লিক এবং থ্রাস্টারে ত্রুটির কারণে রিটার্ন মিশনটি বন্ধ করতে হয়।
এমতাবস্থায়, সুনিতা উইলিয়ামস বর্তমানে তাঁর সঙ্গীর সাথে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নিরাপদে রয়েছেন। তবে দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকা তাঁর পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। মূলত, মহাকাশচারীরা যখন মহাকাশে যান তখন সেখানকার পরিবেশ পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়। সমস্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম থাকা সত্বেও কেউ মহাকাশে বেশিদিন থাকতে পারে না। কারণ মহাকাশে মাইক্রোগ্র্যাভিটি এবং বিকিরণের বিষয়টি মানব স্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হয়।
এদিকে, স্পেস স্টেশনে দীর্ঘ সময় থাকার ক্ষেত্রে আরেকটি অসুবিধে হল যেহেতু সেখানে কোনও মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই তাই, এর অভাবে শরীরের তরলগুলি ওপরের দিকে যেতে শুরু করে। এমন অবস্থায় মুখে ফুলে যায় এবং নাক বন্ধ হতে থাকে। এছাড়াও পায়ে তরলের অভাব ঘটতে থাকে। আর এই কারণেএ শরীরে রক্তের অভাব দেখা দেয় এবং রক্তচাপের ব্যাঘাত ঘটে।
আরও পড়ুন: Jio, Airtel-এর মধ্যে কে দিচ্ছে সস্তায় বার্ষিক প্ল্যান? পকেটের টান এড়াতে এখনই নিন জেনে
মহাকাশে হাড় দুর্বল হয়ে যায়: মহাকাশচারীরা যখন মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরে আসেন তখন তাঁদের ওপর মারাত্মক প্রভাব দৃশ্যমান হয়। অনেক সময় তাঁরা মাটিতে দাঁড়াতে পর্যন্ত পারেন না বা তাঁরা অজ্ঞান হয়ে যান। এমন পরিস্থিতি সব মহাকাশচারীর সাথেই ঘটে। মাইক্রোগ্র্যাভিটি পেশীতেও মারাত্মক প্রভাব ফেলে। যার কারণে মহাকাশচারীদের পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে পা এবং পিঠে এই প্রভাব সবথেকে বেশি পরিলক্ষিত হয়। এছাড়াও দুর্বল হয়ে পড়ে হাড়। বিশেষ করে মেরুদণ্ড ও শ্রোণীর মতো ওজন বহনকারী হাড় দুর্বল হয়ে যার। মূলত, যান্ত্রিক চাপ হ্রাসের কারণে, হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস পায়।
আরও পড়ুন: 12GB RAM, 50MP-র ক্যামেরা, 45W-এর চার্জিং সহ লঞ্চ হল OPPO A3 5G স্মার্টফোন, সাধ্যের মধ্যেই আছে দাম
দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকা কতটা বিপজ্জনক: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, প্রতিকূল পরিণতি মোকাবিলা করার জন্য, মহাকাশচারীরা স্পেস স্টেশনে ব্যায়ামও করেন। তবুও, তাঁদের হাড়গুলি প্রভাবিত হয়। শরীরে তরল বন্টনের অভাবে প্রস্রাবে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায়। যা কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। সামগ্রিকভাবে, মহাকাশের বায়ুমণ্ডল মানবদেহে বিরূপ প্রভাব ফেলে। যার কারণে দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকা মানবদেহের জন্য বিপজ্জনক প্রমাণিত হতে পারে।