বাংলা হান্ট ডেস্ক:ছোটদের মধ্যে চিরকালই সুপারহিরো নিয়ে উত্তেজনা চরমে। নিনজা হাতরী, পারম্যান, সুপারম্যান শক্তিমান, হ্যারি পটার, শক্তিমান ছাড়িয়ে এখন ছোটদের মন ক্যাপ্টেন আমেরিকা ও মার্বেলে মজেছে।টেলিভিশন ছাড়াও আমার অনেক ধরনের গল্পের বই পড়েও এদের কথা জানি।কিন্তু এখন যদি কেউ বলে বিশ্বের অনেক জায়গায় আছে সুপারহিরোদের অস্থিত্ব এখনো আছে তাহলে তা অবাক হওয়ার মতো নয় কি! এরকম কিছু মানুষ এর খোঁজ পাওয়া গেছে।
বরফমানবঃশুধু একটা প্যান্ট এবং এক জোড়া জুতা পরে মাউন্ট এভারেস্টে হাঁটতে শুরু করেছিলেন উইম হফ। হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন এভারেস্টের বরফাচ্ছন্ন পর্বতের ডেথ জোন। শুধু তাই নয়, ৬০ বছর বয়সী উইম হফ তুষার ম্যারাথনে অংশ নিয়ে গড়েছেন বিশ্ব রেকর্ড, ছুটে বেড়িয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে শীতল অঞ্চলগুলোতে। এভাবে একের পর এক করে২৬টি বিশ্ব বিশ্বরেকর্ড ভেঙেছেন তিনি। সেকারণেই তিনি পরিচিতি পেয়েছেন বরফমানব হিসেবে।বরফে চলা উইম হফের কাছে যে রীতিমতো ডাল-ভাত ব্যাপার।
দশটা সুপারহিরোর গল্পের মতো উইম হফও একদম হঠাৎই নিজের এই বিশেষ ক্ষমতার কথা জানতে পারেন। এক শীতের সকালে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামের এক বরফজমা হ্রদের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন ১৭ বছরের কিশোর উইম হফ। হঠাৎই তার মনে হয় হ্রদের মধ্যে একটু সাতার কেটে নিলে মন্দ হয়না! আর সেই মতই তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন সাঁতার কাটতে ।সাধারণ মানুষের চোখে যা প্রায় অসম্ভব তা সম্ভব করে দেখান তিনি। সেখান থেকেই তার গল্প শুরু।
ভেরোনিকা দেখেন এক মাইল দূরের বস্তুঃ
জনপ্রিয় সিরিজ গেম অব থ্রোনসের চরিত্র ব্রেন্ডন স্টার্কের মতো ভেরোনিকা সেইডারেরও আছে অসীম দৃষ্টিশক্তি যা সাধারণ মানুষ এর থাকার কথা না। ১৯৫১ সালে জন্ম নেওয়া এই জার্মান নারী এক মাইল দূরে থাকা বস্তুও পরিষ্কার দেখতে পান।
ওয়ার্ল্ড বুক এর রেকর্ড অনুযায়ী এই নারীর দৃষ্টিশক্তি যেকোনো সাধারণ মানুষের চেয়ে বিশ গুণ শক্তিশালী। শুধু তা–ই নয়, কোনো কিছুর সাহায্য ছাড়াই কোনো বস্তু বা ব্যক্তি কত দূরে আছে, তা–ও বলে দিতে পারেন তিনি।
একটানা দিনের পর দিন, মাইলের পর মাইল দৌড়ানোর ক্ষমতা রাখেব যুক্তরাষ্ট্রের ৫৬ বছর বয়সী ডিন কারনাজেস:
তিনি একটানা ৫৬৩ কিলোমিটার (৩৫০ মাইল) দৌড়ে পাড়ি দিয়েছেন মাত্র তিন দিনে। তিনি দৌড়ে বেড়িয়েছেন গহীন ডেথ ভ্যালিতে, এমনকি বরফ শীতল দক্ষিণ মেরুতেও। একজন মানুষ যখন দৌড়ায়, তখন শরীর গ্লুকোজ ভেঙে ল্যাকটেট উৎপন্ন করে শক্তি জোগায়। কিন্তু বেশিক্ষন দৌড়ালে তা হয়না ফলে শরীরে ঝিম ভাব নিয়ে আসে। কিন্তু ডিন কারনাজেস এই সমস্যার ঊর্ধ্বে। তিনি চাইলে আজীবন এমন বিরতি ছাড়াই দৌড়াতে পারবেন।
ফ্রান্সের স্পাইডারম্যান:
অলেইন রবার্টকে অনেকে ডাকেন ফরাসি স্পাইডারম্যান বলে। কারণটা খুবই সহজ। কারণ স্পাইডারম্যান এর কীর্তি আমরা জানি। দড়ি বা অন্য কোনো যন্ত্রপাতির সাহায্য ছাড়াই সুউচ্চ সব দালান বেয়ে ওঠার সক্ষমতা রাখে সে। রবার্টের ও তাই আছে। এই অসাধ্য সাধনে তাঁর সঙ্গী হচ্ছে চকের গুঁড়া।
এখন পর্যন্ত রবার্ট উঠেছেন ১৬০টি উঁচু ভবনে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ভবন সংযুক্ত আরব-আমিরাতের বুর্জ খলিফা, তাইওয়ানের তাইপে ১০১ ভবন এবং লন্ডনের লয়েড ভবন।
অবশ্য এই পাগলামি করতে গিয়ে অবশ্য গ্রেপ্তারও হয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে লন্ডনের ২১২ মিটার উচ্চতার সেলসফোর্স টাওয়ারে ওঠার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাজ্য পুলিশ। কিন্তু ৫৭ বছর বয়সী স্পাইডারম্যান দমে যাওয়ার পাত্র নন। নিজের বাড়ির আশেপাশের প্রতিবেশীদের বাড়ির দেয়াল বেয়ে এখনো অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
তথ্যগুলি কতটা সত্যি বা মিথ্যে সেই সম্পর্কে কোন যুক্তি বা প্রমাণ না থাকলেও এগুলি জানতে বেশ মজাদারই লাগে। আর তাছাড়াও উপরিউক্ত মানুষদের গিনিস ওয়ার্ল্ড বুকে রেকর্ড রয়েছে। তাই বর্তমান যুগে এদেরকেই সুপারহিরো বললে খুব ভুল বলা হবে না