‘যৌন সংযম’ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের মন্তব্যে বিতর্ক! এবার বড় পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২৩ সালের একটি মামলা। তাতে বড় মন্তব্য করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি পার্থসারথি সেন ও বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাসের পর্যবেক্ষণ ছিল, একজন কিশোরীর নিজের ‘যৌন আবেগ’ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। মিনিট দুয়েকের তৃপ্তির জন্য সেটা হারানো উচিত নয়। এরপরেই সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয়। এবার সেই মামলাতেই ‘নিগৃহীতা’র বয়ান শুনে বড় পর্যবেক্ষণ করল শীর্ষ আদালত।

‘বিচারব্যবস্থাই ওকে হারিয়ে দিয়েছে’, পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)

বছর দুয়েক আগে যৌন হেনস্থার সেই মামলায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের পরেই সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নির্দেশে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশ খারিজ করে দেয় বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়া ও বিচারপতি এস ওকার বেঞ্চ। সেই সঙ্গেই জানানো হয়, তিন সদস্যের কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে দোষীর কী শাস্তি হবে সেটা ঠিক হবে।

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট দিয়েছে ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি। তারা জানায়, যৌন হেনস্থার অভিযোগ যার বিরুদ্ধে উঠেছিল, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর সেই ব্যক্তিকেই মেয়েটি বিয়ে করেছে। বর্তমানে তাঁর সঙ্গে সংসার করছে, দু’জনের সন্তানও রয়েছে। ওই মেয়েটির সঙ্গে কথাও বলেছে বিশেষজ্ঞের কমিটি। তাঁর মানসিক, পারিবারিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছে তারা। এরপরেই শীর্ষ আদালতে রিপোর্ট জমা দেয়।

আরও পড়ুনঃ হেভিওয়েট কেন্দ্রে হাল বেহাল TMC-র! বড় টার্গেট বেঁধে দিলেন জেলা সভাপতি, পাল্টা খোঁচা BJP-র

বিশেষজ্ঞের কমিটির ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের দাবি, যে ঘটনা ঘটেছিল, সেটাকে কখনওই অপরাধ হিসেবে মেয়েটি দেখেনি। বরং ঘটনার সময় ওই অভিযুক্ত যুবককে ‘অপবাদে’র হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে ওই মেয়েটিকে যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল, সেই মানসিক ধাক্কা এখনও পুরোপুরি কাটাতে পারেনি সে।

এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘ওকে সমাজ খারাপ চোখে দেখেছে। আমাদের বিচারব্যবস্থাই ওকে হারিয়ে দিয়েছে। ওর নিজের বাড়ির লোক ওকে পরিত্যাগ করেছে। আইনের পরিভাষায় ওই ঘটনাকে অপরাধ বলে দাগিয়ে দেওয়া হলেও মেয়েটি সেটা কখনওই মেনে নেয়নি। এই মামলা সবার চোখ খুলে দেওয়ার মতো’।

Supreme Court

সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে, ওই মেয়েটির অর্থনৈতিক সাহায্য দরকার। দশম শ্রেণির পরীক্ষার পর ওই তরুণীর জন্য কোনও কাজের বন্দোবস্ত করা প্রয়োজন। শীর্ষ আদালতের কথায়, ‘ওকে সম্পূর্ণ ব্যবস্থাই ব্যর্থ করেছে’।

উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগে এই যৌন হেনস্থার মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) অবধি। এবার তাতেই বড় পর্যবেক্ষণ করল আদালত। ‘ওকে সম্পূর্ণ ব্যবস্থাই ব্যর্থ করেছে, মন্তব্য খোদ সুপ্রিম কোর্টের।

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

X