বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে দেশে একের পর এক বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। কেন্দ্র সরকারের একাধিক নীতি থেকে শুরু করে ‘অগ্নিপথ’ বিতর্ক মাঝে সরগরম দেশের পরিস্থিতি। এর মাঝেই কয়েক সপ্তাহ পূর্বে পয়গম্বরকে নিয়ে প্রাক্তন বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার মন্তব্য গোটা দেশে সমালোচনার ঝড় তুলে দেয়। এমনকি বিদেশের একাধিক প্রান্তেও তাঁর মন্তব্য বিতর্কের সৃষ্টি করে। এই প্রসঙ্গে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদে সামিল হয় এক শ্রেণীর মানুষ। এই নিয়ে বিতর্কের আঁচ যখন কমার কোন লক্ষণ নেই, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে গোটা দেশবাসীর সামনে নূপুর শর্মাকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন এই প্রসঙ্গে শুনানি চলাকালীন নূপুর শর্মাকে উদ্দেশ্য করে একের পর এক মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত। তিনি বলেন, “যেভাবে পয়গম্বরকে নিয়ে নূপুর শর্মা বিতর্কিত মন্তব্য প্রকাশ করেছিলেন, তার জন্য গোটা দেশের সামনে ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি একা হাতে সকল বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। আমরা দেখেছি যে, এই বিতর্ক সারা দেশে কিভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক এক ঘটনা।”
এদিন সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলাকালীন প্রাক্তন বিজেপি নেত্রীর আইনজীবী জানান যে, নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং গোটা দেশ থেকে একের পর এক হুমকি এসে চলেছে তাঁর উদ্দেশ্যে। পরবর্তীতে এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি বলেন, “উনি (নূপুর শর্মা) হুমকি পাচ্ছেন নাকি নিজে নিরাপত্তাজনক অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছেন? আসলে বর্তমানে যা হয়েছে, তার জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী তিনি।”
প্রসঙ্গত, ঘটনার দিন একটি নিউজ চ্যানেলের ডিবেট শোয়ে পয়গম্বরকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন নূপুর শর্মা, যা নিয়ে পরবর্তীকালে সরগরম হয়ে ওঠে দেশের পরিস্থিতি। এই বিষয়টি আদালতে উল্লেখ করা প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, “কোন একটি দলের মুখপাত্র হলেই যে কেউ যা খুশি বলতে পারবেন কিংবা আইনের পরোয়া না করে যেকোনো বক্তব্য পেশ করতে পারবেন, এটা ভেবে থাকলে সেটা অন্যায়।”
এছাড়াও এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জানান, “যেভাবে নূপুর শর্মা তাঁর মন্তব্যকে পেশ করেছেন, সেটা নিন্দনীয়। ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে সকলের বলার অধিকার থাকলেও ভেবেচিন্তে মন্তব্য পেশ করা উচিত।” আর এরপরেই গোটা দেশের সামনে নূপুর শর্মাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।