বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কেন্দ্রীয় সরকারের আনা সিএএ বা সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট নিয়ে একসময় উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা বাংলা। এবার এক ব্যক্তির ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রশ্নে সুপ্রিম (Supreme Court) রায়ে মিলল বিরাট স্বস্তি। সিএএ বিল অনুযায়ী ২০১৪ সালের আগে যদি কোনো সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি কিংবা খ্রিস্টান পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসেন আর তাঁদের কাছে যদি কোনো বৈধ নথি না থাকে তাহলেও তাঁদের ‘অবৈধ অভিবাসী’ বলা যাবে না।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা ব্যক্তির নাগরিকত্বের মামলা সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)
সিএএ অ্যাক্ট অনুযায়ী ১৯৭৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানের শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। এই আইনকে রক্ষাকবচ করেই এবার নাগরিকত্বের প্রশ্নে স্বস্তি পেলেন এক ব্যক্তি। পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা ওই হিন্দু আবেদনকারীর নাগরিকত্বের আবেদন মঞ্জুর করতে গিয়েই সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি জে কে মহেশ্বরী ও বিচারপতি আর মহাদেবনের ডিভিশন বেঞ্চ ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ধারা ২(১)(খ) এর কথা উল্লেখ করেছিলেন।
জানা যাচ্ছে, এদিনের মামলাকারী ওই ব্যক্তি ১৯৬৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসেছিলেন। ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার আর্জি নিয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই মামলায় ২০১৯ সালের উল্লেখ করে ওই ব্যক্তিকে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। অবশেষে ভারতীয় নাগরিকত্ত্বের প্রশ্নে বড় স্বস্তি পেলেন ওই ব্যক্তি।
১৯৬৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে মাত্র ১৬ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে ভারতে এসেছিলেন তিনি। ভারতের কাছে বাবার অভিবাসন সার্টিফিকেট দেখিয়েই নিজের নাগরিকত্বের সার্টিফিকেটেরও আবেদন করেছিলেন তিনি। অনুমতি চাওয়ার ক্ষেত্রে তখন নো অবজেকশন সার্টিফিকেটও পেয়েছিলেন তিনি। তারপর ১৯৮৫ সালে পশ্চিমবঙ্গেই সরকারি চাকরিও পেয়ে যান তিনি।
আরও পড়ুন: কলঙ্কিত শিক্ষাঙ্গন! কলেজেই যৌন হেনস্থার শিকার মানসিক প্রতিবন্ধী ছাত্রী, ধৃত ২, প্রশ্নের মুখে পুলিশ
তবে নিয়ম অনুসারে চাকরি পাওয়ার ৩ মাসের মাথায় পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। কিন্তু তিনি চাকরি পাওয়ার ২৫ বছর পর ২০১০ সালে সেই সার্টিফিকেট জমা দেন। রিপোর্টে দেখা যায় তাঁর নাগরিকত্ব প্রমাণিত না হওয়ায় আবেদনকারীর নামের পাশে অযোগ্য লেখা রয়েছে। এরপর ২০১১ সালে তাঁর চাকরি চলে যায়। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর চাকরিকালীন সমস্ত সুবিধা।
এরপর ভারতীয় নাগরিকত্বের আর্জি নিয়ে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হন তিনি। এই মামলায় কোর্টের তরফে বলা হয়েছে,’যে ব্যক্তি ভারতীয় বংশোদ্ভূত, তিনি যদি অবিভক্ত ভারতের বাইরের কোনও দেশ বা স্থানের একজন সাধারণ বাসিন্দা হন তাহলে তিনি ভারতের নাগরিক হতে পারেন।’
একইসাথে কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এই মামলাকারীর দাবি তার দাদু-দিদা তাঁদের জন্মগত ভাবে ভারতীয় নাগরিক। উল্লেখ্য নাগরিকত্ব সম্পর্কিত বিধানগুলি ভারতের সংবিধানের পার্ট II তে ৫ থেকে ১১ অনুচ্ছেদের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ এর ধারা ৪, অনুযায়ী আপিলকারীর বাবাকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিক হিসাবে বিবেচনা করা যায়। তাই ওই ব্যক্তি আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী নিবন্ধনের মাধ্যমে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী।’