ঘুষ নেওয়া বা ঘুষ দেওয়া দুটোই অপরাধ। কিন্তু টাকার দিয়ে জামিন পেয়ে যাওয়া কতটা না ন্যায় সঙ্গত তা নিয়ে বহুবার প্রশ্নঃ উঠে। আসলে আগে ভারতের ন্যায় বিচার মনুস্মৃতি অনুযায়ী হতো। তবে এখন বিচার ব্যবস্থা পুরোপুরি ইংরেজদের প্রভাবিত সংবিধান ও আদালতে হয়ে থাকে। তাই বিচার ব্যবস্থা নিয়ে অনেক ভারতীয়দের মনের কোণে অসন্তোষ থেকেই যায়। ভারতের সংবিধান 39A তে লেখা হয়েছে সরকারের উচিত এমন ন্যায় ব্যাবস্থা প্রদান করা যাতে অর্থের জন্য কারোর উপর কোনো প্রভাব না পড়ে। ভারতে ন্যায় ব্যবস্থার সবথেকে শক্তিশালী অংশ সুপ্রিম কোর্টকে মনে করা হয়। কিন্তু বিড়ম্বনা এই যে, আপনাকে সুপ্রিম কোর্টের থেকে ন্যায় পেতে হলে রাজধানী দিল্লী যেতে হবে।
এখন একটা প্রশ্নঃ উঠতে পারে যে, দক্ষিণ ভারত বা পূর্ব ভারতে থাকা কোনো গরিব ব্যাক্তি কিভাবে দিল্লীতে এসে তার ন্যায় পাওয়ার আওয়াজ তুলবে। এমনকি কোনো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্যেও দিল্লী আসা যাওয়া করা সেখানে থেকে বিচারের অপেক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়াও যেভাবে পেন্ডিং মামলা যেভাবে বৃদ্ধি হচ্ছে তাও বিচার বাবস্থ্যার জন্য মাথা ব্যাথার মতো। এমন অবস্থায় দেশের উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু দেশের সামনে একটা গুরুত্বপূর্ণ মত প্রকাশ করেছেন। যেটা লাগু করা হলে এই সমস্যা থেকে অনেকটা স্বস্তি পাবে দেশের নানা প্রান্তের মানুষজন।
ভেঙ্কাইয়া নাইডু বলেছেন শীর্ষ কোর্টের বিভাজন হওয়া উচিত যাতে মামলাগুলি দ্রুতগতিতে সমাধান করা যায়। বিচার ব্যবস্থায় দেরি ও দেশের মানুষদের সমস্যার দিকে লক্ষ রেখে উনি সুপ্রিম কোর্টের বিভাজন করার মত প্রকাশ করেন। উনি মামালগুলির দ্রুত সমাধানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের চারটি ক্ষেত্ৰীয় পীঠ তৈরী করার আবেদন করেন। উপরাষ্ট্রপতির দ্বারা প্রকাশিত মতকে লাগু করলে দিল্লী থেকে বহু দূরে থাকা দেশের মানুষজন সুবিধা পাবে। উপরাষ্ট্রপতি এটাও জানিয়ে দেন যে, বিচার ব্যাবস্থার এই পরিবর্তন করতে কোনো বিধায়ক পাশ বা আইন সংশোধন করতে হবে না।
এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, এই ব্যবস্থা বাস্তব হলে দেশের মানুষ ন্যায় পাবার জন্য আইন কানুনের উপর অনেক ভরসা পাবে। একইসাথে দেশের নানা প্রান্তের মানুষজন লাভ তুলতে পারবে। তবে এক্ষেতে সুপ্রিম কোর্টের পদক্ষেপ খুবই নিরাশাজনক। চেন্নাই, কলকাতার, হায়দ্রাবাদ, মুম্বাইতে পীঠ গঠনের আর্জিকে সুপ্রিম কোর্ট আগে খারিজ করে দিয়েছে। আদালত দিল্লীর বাইরে অন্য কোনো পীঠ করতে দিতে রাজি নয়। বলা হয় ন্যায় প্রাপ্তে দেরি হলে সেটাকেও অন্যায় বলা হয়। তাই আদালতের এটা মনযোগ দেওয়া উচিত যাতে দেশের মানুষ বিলম্ব ছাড়াই ন্যায় পেতে পারেন। এখন ৩১ জন বিচারপতি আছেন যাদের কাছে ৪০ হাজার মামলা পড়ে আছে।