বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সরকারি চাকরি পাওয়া এখন যেন হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো হয়ে গিয়েছে। বছরের পর বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের পরেও শিঁকে ছেড়ে না অনেকের। এবার এই সরকারি চাকরি সংক্রান্ত এক বিষয়েই বড় নির্দেশ দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। পশ্চিমবঙ্গের একটি মামলার প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
সরকারি চাকরি নিয়ে সুপ্রিম-নির্দেশ (Supreme Court)!
১৯৮৫ সালে সরকারি চাকরিতে (Government Job) যোগ দিয়েছিলেন বাসুদেব দত্ত। পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট জমা পড়ার কথা থাকলেও, তা জমা পড়ে ২৫ বছর পর। এরপর ২০১১ সালে বাসুদেব নামের ওই প্যারামেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টের পিতার অভিবাসন শংসাপত্র সম্বন্ধে প্রশ্ন তুলে তাঁর চাকরি বাতিল করা হয়। অবসরের মাত্র ২ মাস আগে তাঁর চাকরি বাতিল করা হয় বলে খবর।
দীর্ঘ আড়াই দশক চাকরি করার পর আচমকাই চাকরি বাতিল হয় বাসুদেববাবুর। এবার এই মামলার প্রেক্ষিতেই বড় নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সরকারি কর্মী (Government Employee) হিসেবে নিয়োগ হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। প্রত্যেকটি রাজ্যকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ জেল থেকে বেরোতেই নয়া অভিযোগ! ফের বিপাকে নিয়োগ দুর্নীতির জীবনকৃষ্ণ? জোর শোরগোল
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন (Police Verification) রিপোর্ট দাখিল করায় দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ, গা-ছাড়া মনোভাবে সুপ্রিম কোর্ট অসন্তুষ্ট। এই কারণে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ নিয়মিতকরণে বিলম্ব হয়। তাই এবার সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়ে দিল বিচারপতি জে কে মহেশ্বরী এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের ডিভিশন বেঞ্চ।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের প্রাক্কালে প্রার্থীদের ইতিহাস, চরিত্র, নাগরিকত্বের প্রমাণ, জমা করা নথিপত্রের মান্যতা তদন্ত সাপেক্ষে রিপোর্ট দাখিল করতে হয় পুলিশকে। এই কাজেই গা-ছাড়া মনোভাব এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে অসন্তুষ্ট সুপ্রিম কোর্ট। এবার তাই দেশের প্রত্যেক রাজ্যের পুলিশকর্তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিল আদালত।
এদিকে বাসুদেববাবুর মামলায়, দীর্ঘ ২৫ বছর অভিযোগহীন চাকরি করার পরেও অবসরের মাত্র মাস দুয়েক আগে তাঁর চাকরি বাতিল করা হয়। আটকে দেওয়া হয় তাঁর অবসরকালীন পাওনা। বাসুদেববাবুর পিতার অভিবাসন শংসাপত্র সম্বন্ধে প্রশ্ন তুলে চাকরি বাতিল করা হয় বলে খবর। রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুন্যালে সরকারি সেই সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। এদিকে এত দেরি করে জমা দেওয়া রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে এমন সিদ্ধান্তে অবাক সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এমনকি চাকরি বাতিলের প্রাক্কালে আবেদনকারী বক্তব্য শোনার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেনি কর্তৃপক্ষ। এবার এই মামলার প্রেক্ষিতেই সরকারি চাকরির পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে বড় নির্দেশ দিয়ে দিল আদালত।