যন্ত্রণা অতীত! জেলবন্দিদের কথা মাথায় রেখে বড় নির্দেশ! ‘এই’ আইন কার্যকর করতে বলল সুপ্রিম কোর্ট

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারতের নানান জেলে (Prison) বন্দি বহু মানুষ। কেউ অভিযুক্ত, কেউ আবার অপরাধী! বছরের পর বছর ধরে জেলের চার দেওয়ালের মধ্যেই দিন কাটছে তাঁদের। এই জেলবন্দিদের (Prisoner) মধ্যে আবার অনেকে রয়েছেন যারা বিশেষভাবে সক্ষম। তাঁদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা, সম্পদের দাবিতেই সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতেই বড় নির্দেশ দিয়ে দিল শীর্ষ আদালত।

কী নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)?

জানা যাচ্ছে, কেরালার একজন রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট এই মামলা দায়ের করেছিলেন। দাবি করা হয়, এদেশের জেলে বিশেষভাবে সক্ষম বন্দিদের যথাযথ থাকার জায়গা দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। যা কিনা তাঁদের মৌলিক অধিকার ভঙ্গ করে। বিশেষত যারা বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

সেই কারণে বিশেষভাবে সক্ষম বন্দিদের যাতে যথাযথ সুযোগ-সুবিধা, সংস্থান দেওয়া হয় তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে এই মামলা দায়ের করা হয়। ‘রেসপন্ডেন্ট অথরিটি’দের এই নির্দেশনা জারির কথা বলেন আবেদনকারী। জানা যাচ্ছে, এই জনস্বার্থ মামলায় ‘রেসপন্ডেন্ট অথরিটি’ছিল ভারত সরকার, ডিপার্টমেন্ট অফ এমপাওয়ারমেন্ট অফ পিডব্লিউডি, মিনিস্ট্রি অফ সোশ্যাল জাস্টিস এবং নানান রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এই মামলার প্রেক্ষিতেই বড় নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। বিচারপতি বিক্রম নাথ ও বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ কিছুক্ষণেই পাল্টে যাবে আবহাওয়া! দক্ষিণবঙ্গে ধেয়ে আসছে কালবৈশাখী! লণ্ডভণ্ড হবে কোন কোন জেলা?

আবেদনকারীর কথায়, ‘বিশেষভাবে সক্ষম বন্দিদের জন্য তাঁদের বিশেষ প্রয়োজনের কোনও ব্যবস্থা নেই। সাধারণ জেলবন্দিদের মতো একইভাবে তাঁদের রাখা হয়। ফলে তাঁদের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা থাকলেও তাঁরা সেটা পাচ্ছেন না। এদিকে এই জন্য রাইটস অফ পারসনস উইথ ডিস্যাবিলিটিজ অ্যাক্ট, ২০১৬-এর উদ্দেশ্য লঙ্ঘিত হচ্ছে’।

Supreme Court

আবেদনকারী আরও জানিয়েছেন, বিশেষভাবে সক্ষম মানুষরা সাধারণত রোজনামচার কাজের জন্য অন্য মানুষের ওপর নির্ভরশীল। তবে জেলের মধ্যে এমন কোনও বন্দোবস্ত না থাকায় বাকি সাধারণ বন্দিদের তুলনায় বিশেষভাবে সক্ষম বন্দিরা (PwD Prisoner) অসুবিধার সম্মুখীন হন।

জনস্বার্থ মামলার (PIL) আবেদনকারী জানিয়েছেন, প্যারাপ্লেজিক বন্দিদের নিজস্ব প্রয়োজন অনুসারে থাকার জায়গা, শৌচালয় ইত্যাদির দরকার হয়। কিন্তু জেলের মধ্যে এমন ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণ শৌচাগার, স্নানাগার ব্যবহার করতে অসুবিধার সম্মুখীন হন তাঁরা। এমনকি ভারতের জেলের স্ট্যান্ডার্ড সেলে অনেকসময় তাঁদের হুইলচেয়ারও ‘ফিট’ হয় না। বিশেষত ‘আন্ডা সেলে’র ক্ষেত্রে এই অসুবিধা দেখা যায়।

আরও পড়ুনঃ BJP-র পরবর্তী রাজ্য সভাপতির দৌড়ে নেই দিলীপ ঘোষ? পদ্ম নেতার মন্তব্যে তোলপাড়!

এছাড়া এই বন্দিদের নির্দিষ্ট চিকিৎসা পরিষেবারও প্রয়োজন হয়। যেমন ফিজিওথেরাপি, শারীরিক মূল্যায়ন। তবে জেলের পরিবেশের মধ্যে অধিকাংশ সময়েই এসব নিয়ে অসুবিধা দেখা যায়। আবেদনকারী জানিয়েছেন, এদেশের কিছু রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জেলের ম্যানুয়াল ও নিয়মে বিশেষভাবে সক্ষম বন্দিদের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ থাকলেও তা যথেষ্ট নয়। এই মামলায় অধ্যাপক জিএন সাইবাবা ও ভীমা কোরেগাঁও-অভিযুক্ত স্ট্যান স্বামীর কথাও তুলে ধরা হয়েছিল। যারা বিশেষভাবে সক্ষম বন্দি হিসেবে যন্ত্রণার সম্মুখীন হয়েছিলেন।

এই জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতেই একটি নোটিশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সেখানে বলা হয়েছে, এদেশের প্রত্যেকটি জেলে রাইটস অফ পারসনস উইথ ডিস্যাবিলিটিজ অ্যাক্ট, ২০১৬ কার্যকর করতে হবে। বিচারপতি নাথ ও বিচারপতি মেহতার বেঞ্চ এই অর্ডার পাস করেছে। আগামী ৮ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর