বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমান সময়ে কমবেশি প্রত্যেকেই সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) ব্যবহার করেন। স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, বহু মানুষের অবসর সময় কাটে সমাজমাধ্যমে। এবার ফেসবুক ব্যবহার নিয়েই কড়া নিদান দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সম্প্রতি বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিং এবং বিচারপতি বিভি নাগরত্নার বেঞ্চ এই মন্তব্য করেছে।
ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে কী বলল শীর্ষ আদালত (Supreme Court)?
দুই মহিলা বিচারককে বরখাস্ত করেছিল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট (Madhya Pradesh High Court)। বিচারক অদিতি কুমার শর্মা ও বিচারক সরিতা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা সম্বন্ধিত বিষয় ফেসবুকে পোস্ট করার অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি সেই মামলার শুনানিতেই সর্বোচ্চ আদালত বলে, ‘বিচারব্যবস্থার মাথায় বসে থাকা আইনরক্ষকদের ফেসবুক ব্যবহার করাই উচিত নয়। তাঁদের রায়ের বিষয়ে কোথাও কোনও মন্তব্য করা ঠিক নয়’।
কারণ ব্যাখ্যা করে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) তরফ থেকে বলা হয়, আগামীদিনে যদি কোনও মামলায় সেই রায় উত্থাপিত হয়, তাহলে বিচারকের আগের মন্তব্যের ভিত্তিতে পক্ষপাতের অভিযোগ উঠতে পারে। এই কারণে বিচারকদের সমাজমাধ্যম ব্যবহার করায় সংযমী হওয়া এবং অনলাইনে নিজেদের মতামত অথবা রায় প্রকাশ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয় শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুনঃ বাস নিয়ে নয়া সিদ্ধান্ত! কড়া পদক্ষেপ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের
জানা যাচ্ছে, গত বছর নভেম্বর মাসে ৬ জন মহিলা বিচারককে বরখাস্ত করার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি গ্রহণ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ওই ৬ বিচারকের মধ্যে ৪ জনকে শর্তসাপেক্ষে পুনরায় বহাল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাকি ২ বিচারকের মামলা বর্তমানে শীর্ষ আদালতে।
সেই মামলার শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্ট বলে, ‘সোশ্যাল মিডিয়া একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম, খোলা বাজারের মতো। বিচারকদের সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপন ও অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে। ফেসবুক থেকে দূরে থাকা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ’। শীর্ষ আদালতের এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন মামলায় অংশ নেওয়া সিনিয়র আইনজীবী। তিনিও বলেন, বিচারক বা বিচারকর্মীদের বিচার সম্বন্ধিত কাজের কোনও বিষয় ফেসবুকে ভাগ করে নেওয়া উচিত নয়।
এদিকে বিচারক অদিতি শর্মার পারফরম্যান্স সম্বন্ধে হাইকোর্টের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ সাল থেকে ওই বিচারকের পারফরম্যান্স ‘খুব ভালো’ থেকে ‘ভালো’, ‘মোটামুটি’ হয়ে তা ‘খারাপ’এর দিকে চলে যায়। ২০২২ সালে বিচারক অদিতি শর্মার মামলার নিষ্পত্তির হারও ভীষণ কম ছিল। অভিযুক্ত বিচারক উচ্চ আদালতে জানান, ২০২১ সালে তাঁর মিসক্যারেজ হয়, এরপর তাঁর ভাই ক্যান্সার আক্রান্ত হন। এর প্রভাব তাঁর কাজের ওপর পড়েছিল। ওই একই কারণে ফেসবুকে (Facebook) অতিসক্রিয় হয়ে ওঠেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
এবার এই মামলার শুনানিতেই বড় নিদান দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। বিচারকদের জীবনে দেখনদারির কোনও স্থান নেই। তাঁদের সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপন এবং নিষ্ঠাভরে অক্লান্ত পরিশ্রম করা উচিত বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।