বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ছেলের সঙ্গে তাঁর প্রেমিকার বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন তাঁর মা। পরবর্তীতে সেই প্রেমিকা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এই জল প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) এবং পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) অবধি গড়ায়। এবার সেই মামলাতেই বড় পর্যবেক্ষণ শীর্ষ আদালতের।
মামলার শুনানিতে কী বলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)?
জানা যাচ্ছে, ২০০৮ সালে গড়িয়া ও নরেন্দ্রপুর স্টেশনের মাঝে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন সৌম্যা পাল নামের একজন তরুণী। বাবু দাস নামের একজন তরুণের সঙ্গে তিনি সম্পর্কে ছিলেন। পুলিশি তদন্তে জানা যায়, প্রায় ৩-৪ বছর ধরে সম্পর্কে ছিলেন তাঁরা।
সৌম্যার মৃত্যুর পর পুলিশের তরফ থেকে প্রথমে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়। এরপর মৃতার পরিবারের তরফ থেকে বাবুর বাবা-মা সহ অন্যান্য আত্মীয়দের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। সৌম্যার পরিবারের অভিযোগ ছিল, তাঁরা বারবার তাঁদের মেয়েকে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে পড়াশোনায় মন দেওয়ার কথা বলতেন। তবে বাবুর বাড়ির লোক এসব জিনিসে প্রশ্রয় দিতেন।
আরও পড়ুনঃ সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল আরজি কর মামলার শুনানি! পরবর্তী শুনানি কবে? সামনে দিনক্ষণ
পরবর্তীতে পুলিশি তদন্তে জানা যায়, সৌম্যার প্রয়াণের কয়েকদিন আগে প্রেমিকের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়েছিল। মৃতার পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, বাবুর মা সৌম্যার সঙ্গে ছেলের বিয়েতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাঁকে এই নিয়ে অপমানও করেন। প্রথম কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন ছিল এই মামলা। সেখানে বাবুর পরিবারের বিরুদ্ধে নির্দেশ আসে। এরপর সেই জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) অবধি।
উচ্চ আদালত থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে নির্দেশ আসার পর শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় বাবুর পরিবার। সম্প্রতি বিচারপতি বিভি নাগরত্ন ও বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চে এই মামলাটি উঠেছিল। তখনই বাবুর পরিবারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার (Abetment of Suicide) মামলা খারিজ করে দেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) স্পষ্ট জানিয়েছে, প্রেমিকের মা যদি প্রেমিকার সঙ্গে নিজের ছেলের বিয়ে দিতে রাজি না হন, তাহলেও তা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে আত্মহত্যায় প্ররোচনা বলা যায় না। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, আত্মহত্যায় প্ররোচনার ধারা যুক্ত করতে হলে এমন কোনও কাজে প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ দরকার, যা প্রয়াতকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বাধ্য করেছে। কোনও মহিলা যদি নিজের ছেলের প্রেমিকাকে বলেন, ‘ছেলেকে ছাড়া থাকতে না পারলে মরে যাও’, সেটাও আত্মহত্যায় প্ররোচনা বলে গ্রাহ্য হবে না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।