বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের স্কুল শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী পদে ২৬ হাজার প্রার্থীর নিয়োগ নিয়ে এখনও মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। গত বছর এই প্যানেল সম্পূর্ণ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়েছে। এবার যে কোন দিন রায় দিয়ে দেওয়া হবে। এসবের মধ্যেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission) বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল মেয়াদ ফুরানো প্যানেল থেকে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে স্কুল শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে। সেই অভিযোগের জবাবে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্টে অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন।
নিয়োগ-মামলায় অনিয়মের অভিযোগে স্পষ্ট জবাব কমিশনের (School Service Commission)
জবাব দিয়ে হলফনামায় এসএসসির (School Service Commission) তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে মেয়াদ ফুরানো প্যানেল থেকে কাউন্সিলিং-এর বিষয়ে কোনো রকম অনিয়ম হয়নি। সুপ্রিম কোর্টে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে ২০১৮ সালের উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট কাণ্ডকে কার্যত হাতিয়ার করেছে এসএসসি। লিখিত বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টে এসএসসির তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে প্রথম পর্যায়ের কাউন্সেলিংয়ে ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বরে দাড়িভিট স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে গোলমাল হয়েছিল। তার ফলে আবার শূন্যপদ খতিয়ে দেখে সেই ভিত্তিতে প্যানেল থেকে কাউন্সিলিং করা হয়েছিল।
কাউন্সেলিং দেরিতে হওয়ার জন্য দাড়িভিট ছাড়াও হাইকোর্টের একাধিক মামলার নির্দেশকেও দায়ী করেছে এসএসসি (School Service Commission)। তবে শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন বিলম্ব হয়নি বলে দাবি করেছে এসএসসি। প্রশ্ন উঠেছে শূন্যপদে নিয়োগের সুপারিশের থেকে নিয়োগপত্রের সংখ্যা বেশি হওয়া নিয়েও। এবিষয়ে এসএসসি-র স্পষ্ট জবাব, তারা সুপারিশপত্র দিলেও নিয়োগপত্র দিয়েছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
অনেকে আছেন যারা নিয়োগপত্র পাওয়ার পরেও শূন্যপদে যোগ দেননি। তাই সেক্ষেত্রে সেই সুপারিশপত্র বাতিল করে পরবর্তী চাকরি প্রার্থীকে নতুন সুপারিশপত্র দিয়েছিল কমিশন। কিন্তু পর্ষদ এমনটা করেনি। আর তাতেই সমস্যা তৈরী হয়। আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কমিশন যে যুক্তিতে আগের সুপারিশপত্র বাতিল করে নতুন সুপারিশপত্র দিল সেই একই যুক্তিতে পর্ষদেরও আগের নিয়োগপত্র বাতিল হয়ে নতুন নিয়োগপত্র দেওয়া উচিত ছিল। তা কেন হল না?’
আরও পড়ুন: ট্যাংরাকাণ্ডে নতুন মোড়! ‘মেরে ফেলেছে মেয়েকে’, খুনের মামলা রুজু করল পরিবার
গতবছর স্কুল শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী পদে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। পরে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে আর্জি জানায় এসএসসি (School Service Commission) এবং রাজ্য। সেই মামলায় প্রশ্ন উঠেছিল বৈধ এবং অবৈধ ভাবে নিযুক্তদের চিহ্নিত করার বিষয়ে এসএসসির দায়িত্ব নিয়েও।
সম্প্রতি লিখিত জবাবে সিবিআইয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অবশেষে ৫৩০৩ জনের নিয়োগকে ‘অবৈধ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এসএসসি। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলছেন, এসএসসি-র দেওয়া এই তথ্যেও ফাঁক আছে। পুরো নিয়োগ বাতিল হওয়ার পক্ষেই আদালতে একাধিকবার সওয়াল করেছেন তিনি।