বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কামদুনি ধর্ষণ এবং হত্যা মামলায় (Kamduni Gangrape Case) এখনই কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না বলে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) । দেশের সর্বোচ্চ আদালতে কামদুনি মামলার শুনানি স্থগিত। গ্রেপ্তারির পরিবর্তে মামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে নোটিস দিয়ে জবাব তলব করল শীর্ষ আদালত।
কামদুনি কাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মৃতার পরিবার তরফে রাজ্য এবং আট অভিযুক্তর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। সুবিচারের দাবিতে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মৃতার পরিবার এবং প্রতিবাদীরা। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার শুনানি আপাতত স্থগিত করা হল।
কামদুনির নির্যাতিতার ভাই মামলায় ৮ অভিযুক্ত ও রাজ্য সরকারের কাছে জবাবদিহি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে পৃথক SLP জমা করেন। এদিন সেই মামলায় শুনানিতে মামলার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের পাশাপাশি, রাজ্য সরকারকেও নোটিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে। ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য। দোষীদের শাস্তির দাবিতে চলে আন্দোলন। অভিযুক্তকে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। হয় CID তদন্ত। মামলায় অভিযুক্ত ৬ জনের সাজা শোনায় নগর দায়রা আদালত। এরপর নিম্ন আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যায় দোষীরা।
২০১৩ থেকে ২০২৩! দীর্ঘ দশ বছর পর গত বছর অক্টোবর মাসে কামদুনি ধর্ষণ এবং হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১৩-র ৭ জুন কামদুনিতে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল ৯ জন। তবে নিম্ম আদালতে মামলা চলাকালীনই এক অভিযুক্তের মৃত্যু ঘটে। নিম্ন আদালতেই আরও দুজন বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। বাকি ৬ জনের আরজির ভিত্তিতে রায়দান করে কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংঘাতই কাল হল? নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদের ৬ মাসের জেল
প্রথমে মামলাতে দোষী সাব্যস্ত ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড, এবং ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল নিম্ন আদালত। এরপর সাজা কমানোর দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয় ওই ৬ অভিযুক্ত। ঘটনায় ১০ বছর পর অভিযুক্ত আনসার আলি মোল্লা এবং সইফুল আলি মোল্লার ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। অন্যদিকে ফাঁসির সাজার বদলে আমিন আলীকে মুক্তি দেওয়া হয়।
বাকি তিন অভিযুক্ত ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর এবং আমিনুর ইসলামকেও মুক্তি দিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আগে এদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল নিম্ন আদালত। আইনজীবী জানান, যেই তিন অভিযুক্তকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাদের এই মামলায় সাত বছরের কারাদন্ড হতে পারে। তবে ১০ বছর ধরে তারা যেহেতু কারাবাসে রয়েছে তাই ১০০০০ হাজার টাকা জরিমানা করে তাদের মুক্তি দিয়েছে আদালত। এরপরই কলকাতা হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় নির্যাতিতার পরিবার। একই সাথে রাজ্য সরকারও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।