বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০১৯ সালে হাওড়া আদালতকাণ্ডে সুয়ো মোটো ফৌজদারি অবমাননা মামলা শুরু করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এরপর এই জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) অবধি। এবার তাতেই বড় নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। সোমবার বিচারপতি মনমোহন ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়েছে। সেখানেই হাইকোর্টের সুয়ো মোটো (Suo Moto) কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিল আদালত।
আর কী কী বলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)?
২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল হাওড়া জেলা আদালত চত্বরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। আইনজীবীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর এই ঘটনা নিয়ে উচ্চ আদালতের তরফ থেকে নিজের উদ্যোগে বিষয়টি বিবেচনার জন্য নেওয়া হয় ও সেই বছর মে মাসে প্রাক্তন বিচারপতি কে জে সেনগুপ্তের এক সদস্যের কমিশনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এরপর এই জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট অবধি। হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন পুলিশ কর্তারা। তাঁদের আবেদনের ভিত্তিতে এই মামলা গ্রহণ করা হয়। এবার তাতেই বড় নির্দেশ দিয়ে দিল বিচারপতি মনমোহন ও বিচারপতি ভুঁইয়ার বেঞ্চ।
আরও পড়ুনঃ চরম ‘গাফিলতি’! নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতেই সমস্যা, SSC-র উপর ক্ষুব্ধ আবেদনকারীরা
অভিজ্ঞ আইনজীবী চন্দর উদয় সিং এদিন আবেদনকারীদের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, পাঁচ বছর পর কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে ফের হাইকোর্ট বিষয়টি সামনে আসে। এবার এটি আর্টিকেল ২২৬ অনুসারে রিট পিটিশন (Writ Petition) রূপে বিবেচনা করা হয়। এরপর মহেশ্বর পেরি বনাম এলাহাবাদ হাইকোর্ট (২০১৬) মামলার রায় উল্লেখ করে বলা হয়, আদালত অবমাননা আইনের ধারা ২০ অনুযায়ী সুয়ো মোটো অবমাননার কার্যক্রম শুরু করা হলে সেক্ষেত্রে এক বছরের সময়সীমা প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
এক্ষেত্রে হাইকোর্ট কীভাবে ফের পাঁচ বছর পর নিজে থেকে সুয়ো মোটো অবমাননার কার্যক্রম শুরু করতে পারে, বিশেষত যেখানে আইন অনুযায়ী এই ধরণের পদক্ষেপের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। এই প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী চন্দর উদয় সিং।
অন্যদিকে উচ্চ আদালত নিজের আদেশে জানিয়েছে, ১৯৭১ সালের আইনের ধারা ২০-তে যে সময়সীমার উল্লেখ রয়েছে, সেটা কোনও বক্তি আদালতের সামনে অবমাননার অভিযোগ আনলে প্রযোজ্য। আদালত নিজেই সুয়ো মোটোভাবে কোনও ঘটনায় পদক্ষেপ নিলে তা প্রযোজ্য হয় না।
গতকাল এই মামলার শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশ, আগামী ৬ সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের ২ মে-র আদেশ অনুযায়ী কোনও পদক্ষেপে স্থগিতদেশ জারি করা হচ্ছে। ৬ সপ্তাহের মধ্যে ফের এই মামলার শুনানি হবে। ততদিন উচ্চ আদালতের সুয়ো মোটো কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এই নিয়ে নোটিশও জারি করেছে এদেশের সর্বোচ্চ আদালত।