বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারতবর্ষের পরিচয় হিসেবে এদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় আগে থেকেই ‘সার্বভৌম’, ‘গণতান্ত্রিক’ এবং ‘প্রজাতান্ত্রিক’- এই তিনটি শব্দ ছিল। পরবর্তীতে যুক্ত হয় ‘সমাজতান্ত্রিক’, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দু’টি। ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে প্রস্তাবনায় এই দু’টি শব্দ যোগ করেছিল এদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কংগ্রেস সরকার। এবার এই নিয়েই বড় রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।
প্রস্তাবনায় থাকবে ‘সমাজতান্ত্রিক’, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’? কী বলল শীর্ষ আদালত (Supreme Court)
৪২তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দু’টি যুক্ত করা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এদেশের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলাগুলি একসঙ্গে করে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হয়। সেই শুনানিতেই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানায়, ৩৬৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদের কাছে সংবিধান সংশোধনের (Constitution Amendment) ক্ষমতা রয়েছে। তবে সেই সংশোধনী অবশ্যই এদেশের সংবিধানের মূল কাঠামোর অনুসারী হতে হবে।
সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষ’, এই দুই শব্দ বহাল থাকবে, এদিন স্পষ্ট জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শীর্ষ আদালতের কথায়, সংসদের হাতে সংবিধান সংশোধনীর বিষয়ে ক্ষমতা দিয়েছে সংবিধানই। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, প্রস্তাবনায় (Preamble) যে দু’টি শব্দ যুক্ত করা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের হয়েছিল, সেগুলি এত বছর ধরে নানান বিচারবিভাগীয় পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ছাব্বিশের ভোটকে পাখির চোখ! কর্মসমিতির বৈঠকেই বড়সড় সাংগঠনিক রদবদল তৃণমূলের?
সংবিধানের (Constitution of India) প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এই দুই শব্দের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দায়ের হওয়া মামলায় কয়েকজন উল্লেখযোগ্য মামলাকারী ছিলেন, প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী, আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়, সমাজকর্মী বলরাম সিং।
মামলাকারীদের তরফ থেকে দাবি করা হয়, ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংবিধান সংশোধনী মূল সংবিধানকে বিকৃত করছে। সংবিধান সভার আলোচনায় সংবিধানের প্রণেতারা এই দু’টি শব্দকে সংবিধানের প্রস্তাবনার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন বলেও দাবি করেন মামলাকারীরা। যদিও এদিন সেই সকল যুক্তি খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। ১৯৯৪ সালের এসআর বোম্মাই মামলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানায়, এই দুই শব্দ এদেশের সংবিধানের মূল কাঠামোর তথা ‘বেসিক স্ট্রাকচার’এর পরিপন্থী নয়।