বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলমের এক আঁচড়ে চাকরিহারা (SSC Job Cancelled) হয়েছেন রাজ্যের ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। গত বছর কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দেওয়া নির্দেশ বহাল রেখে ‘বড়সড় দুর্নীতি’র দায়ে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেলটাই বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াকেই, ‘দুর্নীতিতে ভরা’ বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রধান বিচাপতি। হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেই চাকরি বাতিলের সাথে বেতন ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে জানলে অবাক হবেন এই প্যানেলে এমনও কয়েকজন শিক্ষক রয়েছেন যাঁরা এখনও বেতন পাবেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক সুপ্রিম কোর্টের ৪১ পাতার নির্দেশে এপ্রসঙ্গে ঠিক কি বলা হয়েছে?
২৬ হাজার চাকরি হারালেও (SSC Job Cancelled) বেতন পাবেন কারা?
প্রসঙ্গত গতকাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সামনে আসার পর থেকেই বেতন ফেরত দেওয়ার বিষয় নিয়ে অনেকের মধ্যেই ব্যাপক সংশয় তৈরী হয়েছে।প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ২০১৬ সালের প্যানেলে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে প্রশ্নাতীত ভাবে যাঁরা ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ তাঁদের চাকরি (SSC Job Cancelled) তো বাতিল হবেই সেইসাথে বেতনও ফেরত দিতে হবে। এক্ষেত্রে গতবছর হাই কোর্টের রায় সম্পূর্ণ বহাল রাখা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, রাজ্যে এই ধরনের প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় সাত হাজার।
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতির জেরে চাকরিহারা ২৬ হাজার! চাকরি গেল খোদ তৃণমূল কাউন্সিলরের, শোরগোল রাজ্যে
এখন প্রশ্ন হল, আদালতের চোখে ‘চিহ্নিত অযোগ্য’প্রার্থী কারা? জানা যাচ্ছে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে প্রচুর সাদা খাতা উদ্ধার করেছে সিবিআই। এই সমস্ত প্রার্থীরা কোনও প্রশ্নের উত্তর না-লিখেই সাদা খাতা জমা দিয়ে পাশ করে, চাকরিও পেয়ে গিয়েছেন। এই সমস্ত প্রার্থীদের ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া এসএসসির নিয়োগ প্যানেলের বাইরে থেকে যারা চাকরি (SSC Job Cancelled) পেয়েছেন তারাও ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত হয়েছে। এমনকি যারা এসএসসির নিয়োগ প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরি পেয়েছেন। তারাও ‘অযোগ্য’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে একাধিকবার ২৬ হাজার চাকরি বাতিল (SSC Job Cancelled) মামলার শুনানি হলেও ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’ প্রার্থী বাছাই করা যায়নি। জানা যাচ্ছে,উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট উদ্ধার না হওয়ায় অধিকাংশ ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’ প্রার্থীকে চিহ্নিত করা যায়নি। এই কারণেই গোটা প্যানেল বাতিল করতে হয়েছে। তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যাঁদের চিহ্নিত করা যায়নি, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে তাঁদের চাকরি বাতিল হবে। তবে গতকাল ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হলেও, আদালতের নির্দেশে বিশেষ ছাড় পাচ্ছেন প্রতিবন্ধীরা। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের চাকরি বহাল থাকছে। তাই আগামীদিনেও বেতন পাবেন তাঁরা। এছাড়াও এদিন মানবিক কারণে ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাসের চাকরি বহাল রাখা হয়েছে।