ভারতের বিজনেস টাইকুন আনন্দ মাহিন্দ্রার শিক্ষাগত যোগ্যতা জানলে চমকে উঠবেন যে কেউই

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে অন্যতম বিজনেস টাইকুন হলেন আনন্দ মাহিন্দ্রা। তিনি তাঁর দক্ষতায় এক অনন্য জায়গায় নিয়ে গেছেন মাহিন্দ্রা গ্রূপকে। ভারতের বিখ্যাত বহুজাতিক সংস্থা মাহিন্দ্রা গ্রুপের প্রধান কার্যালয় মুম্বাইতে অবস্থিত। মূলত, মাহিন্দ্রা কোম্পানি ভারতে অফ-রোড যানবাহন এবং কৃষিক্ষেত্রের ট্রাক্টর উৎপাদনের জন্য পরিচিত। আনন্দ মাহিন্দ্রা এই গ্রুপের চেয়ারম্যান।

১৯৫৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন আনন্দ। ইতিমধ্যেই সিইও অফ দ্য ইয়ার পুরস্কারে ভূষিত, আনন্দ মাহিন্দ্রার বাবা হরিশ মাহিন্দ্রাও ছিলেন একজন শিল্পপতি এবং তাঁর মা ইন্দিরা মাহিন্দ্রা ছিলেন একজন গৃহিনী। ৬৬ বছর বয়সী বিলিয়নিয়ার আনন্দের দুই বোন রয়েছে। তাঁরা হলেন অনুজা শর্মা এবং রাধিকা নাথ। আনন্দের স্ত্রীর নাম অনুরাধা মাহিন্দ্রা। অনুরাধা একজন সাংবাদিক। পাশাপাশি, তিনি একটি লাইফস্টাইল ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক এবং প্রকাশকও বটে।

শিক্ষা এবং কর্মজীবন:
আনন্দ মাহিন্দ্রা লাভডেলের লরেন্স স্কুলে পড়াশোনা করেছেন এবং তিনি হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। আনন্দ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ম মেকিং এবং আর্কিটেকচার নিয়ে পড়াশোনা করেন। পাশাপাশি, হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে তিনি এমবিএ সম্পন্ন করেন।

১৯৮১ সালে আনন্দ মাহিন্দ্রা তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন মাহিন্দ্রা ইউজিন স্টিল কোম্পানি লিমিটেড (MUSCO)-এর ফাইন্যান্স ডিরেক্টরের সহকারী হিসেবে। কয়েক বছর পরে তিনি MUSCO-এর চেয়ারম্যান ও ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে স্থলাভিষিক্ত হন।

১৯৯১ সালে, তিনি মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা লিমিটেডে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি প্রথমে ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে এবং পরে ভাইস-চেয়ারপারসন পদে উন্নীত হন। ২০১২-র আগস্ট মাসে আনন্দের জেঠু কেশব মাহিন্দ্রা পদত্যাগ করার পর মাহিন্দ্রা গ্রুপের বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে আসীন হন তিনি।

চার বছর পর, তিনি মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা লিমিটেডের একজিকিউটিভ চেয়ারম্যান হিসেবে পুনরায় মনোনীত হন এবং মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবেই বহাল থাকেন। আনন্দ মাহিন্দ্রা কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের সহ-প্রবর্তক ছিলেন কিন্তু ২০১৩ সালে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে তিনি নন-একজিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রেখেছেন। আনন্দ মাহিন্দ্রা তাঁর শ্যালক এবং ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার চারু শর্মার সাথে ২০১৪ সালে প্রো-কাবাডি লিগ শুরু করেছিলেন। এছাড়াও, তিনি মুকেশ আম্বানি এবং মহেশ সামতের সাথে ২০১৪ সালে একটি ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল, EPIC-এর সহ-প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু, দু’বছর পরে, আম্বানি এবং সামত তাদের অংশীদারিত্ব আনন্দ মাহিন্দ্রার কাছে বিক্রি করে দেন।

Mahindra

পুরস্কার:
বর্তমানে, মাহিন্দ্রা গ্রুপ একটি ১৯ বিলিয়ন ডলারের সংস্থা এবং এটি ভারতের শীর্ষ ১০ টি কর্পোরেট হাউসগুলির মধ্যে অন্যতম একটি৷ পাশাপাশি, এই বিপুল খ্যাতি অর্জনের জন্য আনন্দও অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে ২০০৪ সালে রাজীব গান্ধী পুরস্কার দেওয়া হয়। ২০০৪ সালেই, তিনি আবার ফরাসি প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নাইট অফ দ্য অর্ডার অফ মেরিটে ভূষিত হন। ২০০৫ সালে আমেরিকান ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন দ্বারা লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। ২০০৬ সালে, আনন্দকে সিএনবিসি এশিয়া কর্তৃক বিজনেস লিডার অ্যাওয়ার্ডও দেওয়া হয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর