কুণাল-পার্থর বক্তব্য মিলল কিভাবে? সব ষড়যন্ত্রের মূলে মমতা: শুভেন্দু অধিকারী

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) তোলপাড় রাজ্য। একের পর এক কেলেঙ্কারির অভিযোগে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের নাম জড়ানোয় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে বিরোধীদের একের পর এক আক্রমণের মুখে এবার মুখ খুলছে শাসক শিবিরও। পাল্টা অভিযোগে নিশানা করা হচ্ছে বিরোধী দলের নেতাদের। ঠিক সেভাবেই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আক্রমণ করেছেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিজেপির শুভেন্দু, দিলীপ ঘোষদের। অন্যদিকে, কুণালবাবুর টুইটের কয়েক মিনিট পর বড়সড় বোমা ফাটালেন জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)।

তার আক্রমণেও উঠে এল সেই তিনটি নামই। কীভাবে জেল হেফাজতে থাকা পার্থ প্রায় একইসুরে একই নামগুলি তুলে আধ ঘণ্টারও কম ব্যবধানে তোপ দাগলেন বিরোধীদের? এই নিয়েই চলছে জোর চর্চা। এরই মধ্যে এবার এই ইস্যুতে মুখ খুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তার কথায়, ‘খুব দুর্বল চিত্রনাট্য। এই নাটক জেলে থাকা সুদীপ্ত সেনকে দিয়েও লেখানো হয়েছিল। সেখানে বিমানবাবু থেকে শুরু করে আমার নামও ছিল।’ পাশাপাশি পার্থ কী বলবেন, সেটা বুধবার আলিপুর জেলের সুপারের কেবিনে বসে ঠিক হয় বলেও বিস্ফোরক দাবি তোলেন শুভেন্দু।

এখানেই থেমে যাননি তিনি। শুভেন্দুর বলেন, ‘‘এই প্লট তৈরি করা হয়েছে গতকাল। দেবাশিস চক্রবর্তী, যিনি প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার তার দু’টি নম্বর দিচ্ছি। ৩০ মিনিট আগে যিনি টুইট করেছেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। কারণ, বিষয়টি আদালতের নির্দেশে তদন্ত হচ্ছে। আর জেল সুপারকেও ধরা হোক। ওর দু’টি নম্বর নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসটাইম খতিয়ে দেখা হোক বিকেল ৪টে থেকে ৪টে ১৫ পর্যন্ত কার কার সঙ্গে কথা বলেছেন।’’ শুভেন্দু আরও বলেন, ‘‘দেবাশিস চক্রবর্তীর কেবিনে এক জন মহিলা আইনজীবী ছিলেন। সেই কেবিনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও আনা হয়েছিল। বিকেল ৪টে থেকে সওয়া ৪টের মধ্যে প্রেসিডেন্সি জেলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হোক।’’

এখানেই না থেমে চ্যালেঞ্জের সুরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বিধানসভার মধ্যেও বলেছিলাম। একটা ফাঁকা কাগজও যদি দেখাতে পারেন, তা হলে মেনে নেব। ২০১৬ সাল থেকে আমি বিধায়ক। তার আগে সাংসদ ছিলাম। এই সময় কালে তার কাছ থেকে চক, ডাস্টার, ব্ল্যাকবোর্ড পর্যন্ত নিইনি। এই লোকটাকে আমি ঘৃণা করি। কারণ, তিনি দুশ্চরিত্র, লম্পট, দুর্নীতিপরায়ণ। আর এই সবের পিছনে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’

mamata , suvendu

বিরোধী দলনেতার কথায়, ‘একটি ফাটা কাগজের টুকরো দেখান, যেখানে আমার সই নেই, কিন্তু হাতের লেখা রয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ চালুর আগে ২০১১-১২ সালে এসএমএস হত। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এসএমএস খুলুক, ইমেল খুলুক।’ পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘নারদা স্টিং অপারেশন ছাড়া আমার বিরুদ্ধে প্রমাণিত কোনও অভিযোগ নেই।’

শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পর চুপ থাকেননি কুণাল ঘোষ ও। পাল্টা তিনি বলেন, ” যার মন বাঁকা, যার মনে কালি, সে সব কিছুতে চক্রান্ত দেখেন। যখন শুভেন্দু বলেন এরপর সিবিআই এর বাড়ি যাবে, এরপর ইডি ওখানে যাবে… তখন কি সিবিআই আর ইডির ডিরেক্টরের বাড়িতে বসে শুভেন্দু মিটিং করেন? কোনও চক্রান্তের বিষয়ই নেই এখানে। “এরপর কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি বলেন, “জেল ব্যাপারটা মামাবাড়ি নয়। সেখানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। উনি প্রমাণ করে দেখাক, কাল সন্ধেয় এমন কিছু হয়েছে। আমি গতকাল প্রেস কনফারেন্স করেছি। সেটাই আজ টুইট করেছি। ক্ষমতা থাকলে এই বিষয় নিয়ে আদালতে যান।” শুধু তাই নয় বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর