বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ২৮ অগস্ট ছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই সভায় যুব সমাজকে বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি নানা বিষয়ে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর সেখানেই ঐক্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিপত্তি। নিজের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঙ্গে এক-একটি জাতির তুলনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই রাজবংশীর সঙ্গে নিজের পায়ের তুলনা টানেন মমতা।
কি বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? মমতা বলেছিলেন, ‘আমার এক হাত যদি হয় হিন্দু, আরেকটা হাত মুসলমান। আমার একটা চোখ যদি হয় পাঞ্জাব, আরেকটা চোখ হচ্ছে খ্রিষ্টান। আমার একটা পা যদি হয় আমার রাজবংশী, আরেকটা পায়ে আমি চলি তাদের দেখে নমস্কার করি সেটা হচ্ছে মতুয়া’।
আর মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ফের বিতর্ক। চর্চার কেন্দ্রবিন্দু। মমতার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন। আর গতকাল এই ইস্যু নিয়ে ময়দানে নেমেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
আরও পড়ুন: ‘পুলিশের মান বাঁচাতেই হতো’, ১০২ কেজি ওজন, জং ধরা রিভলভার নিয়ে ডাকাত ধরলেন ASI রতন
এদিন টুইট করে শুভেন্দু লিখেছেন, “রাজবংশী” শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো গিয়ে “রাজকীয় সম্প্রদায়” অথবা রাজার বংশধর। ব্যুৎপত্তিবিদদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী কোচ রাজবংশের উত্তরাধিকারিদের একটি ধারা রাজবংশী জনজাতিগোষ্ঠীর সূচনা করেছিলেন। রাজবংশীদের একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দ্বিধায় তাদের নিজের পায়ের সাথে তুলনা করে দিলেন। কিভাবে তিনি এমনটা করলেন?’
মমতাকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু আরও লেখেন ,’যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া যায় যে বিভিন্ন সম্প্রদায় কতটা প্রিয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তা বোঝাতে গিয়ে উনি নিজের দেহের অংশবিশেষের সাথে তুলনা করছিলেন, তাহলেও কাউকে প্রশংসা করার জন্য নয়নের মনি, হৃদয় অথবা হাতের সাথে তুলনা টানতেন। কখনো শুনেছেন কাউকে, পায়ের সাথে অথবা নখের সাথে তুলনা করতে, প্রশংসাসূচক বক্তব্য রাখতে গিয়ে? কেউ কখনই তা করেন না কারণ তা অপমানের সামিল বলেই গণ্য হয়। ‘
আরও পড়ুন: DA আন্দোলনের মাঝেই বিরাট সুখবর! এবার কপাল খুলছে এই সমস্ত সরকারি কর্মীদের
পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরবর্তীকালে কোনও সম্প্রদায়ের ব্যাপারে এমন নিন্দনীয় মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধও জানান নন্দীগ্রামের বিধায়ক। ওদিকে মমতার মন্তব্য অপমানজনক বলে সরব হয়েছে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ।
"রাজবংশী" শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো গিয়ে "রাজকীয় সম্প্রদায়" অথবা রাজার বংশধর। ব্যুৎপত্তিবিদদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী কোচ রাজবংশের উত্তরাধিকারিদের একটি ধারা রাজবংশী জনজাতিগোষ্ঠীর সূচনা করেছিলেন। রাজবংশীদের একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে।
অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দ্বিধায়… pic.twitter.com/GK77xAhgdu
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) August 30, 2023
যদিও এই অপমানের দাবি মানতে নারাজ শাসকদল। তৃণমূলের বক্তব্য, “পায়ের গুরুত্ব দেহের অন্য যেকোন অঙ্গের থেকে কম নয়। ওরা পা ছেড়ে হেঁটে দেখাক। এই সব মন্তব্য কেবল মানুষজনকে বিভ্রান্ত করার জন্য।”