বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি কাণ্ডে (SSC Recruitment Case) চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে মুখ খুলেছে তৃণমূল। এবার উচ্চ আদালতের রায়কে স্বাগত জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এই রায় মানবেন কিনা সন্দেহ আছে।
‘জেলে যাওয়ার জন্য তৈরি হন, ব্যাগ গোছান’! কাদের নিশানা শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)?
গত এপ্রিল মাসে ২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিলের পর চাকরিহারা গ্রুপ সি কর্মীদের জন্য মাসিক ২৫,০০০ টাকা ও গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য মাসিক ২০,০০০ টাকা ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করে রাজ্য। শুক্রবার সেই সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। শুভেন্দু বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা হিসেবে হাইকোর্টের আজকের রায়কে আমি স্বাগত জানাচ্ছি’।
বিজেপি (BJP) বিধায়কের দাবি, ২০১১ সাল থেকে এই রকম ভাতা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘আমার বক্তব্য হল, ভাতা যদি দিতেই হয়, তাহলে ২০১৬ সালে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-র যারা অ্যাডমিট কার্ড পেয়েছিল, সবাইকে দেওয়া উচিত। ওনার টাকা বেশি হয়ে থাকলে বলব, দিদি যদি ভাতা প্রদান করতেই হয়, তাহলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যাদের চাকরি গিয়েছে, শুধু তাঁদের কেন দিচ্ছেন? সবাইকে দিন’।
আরও পড়ুনঃ বকেয়া DA মেটানোর আগে নতুন ‘চালাকি’! সরকারি কর্মীদেরই ‘ভিলেন’ বানাতে চাইছে রাজ্য?
এরপরেই শুভেন্দু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আদৌ উচ্চ আদালতের রায় মানবেন কিনা সেটা নিয়ে তাঁর সন্দেহ আছে। এই প্রসঙ্গে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে আদালতের নির্দেশের কথাও টেনে আনেন তিনি।
বিরোধী দলনেতার কথায়, ‘ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে আদালত যে অর্ডার দিয়েছে, তারপরেও শিক্ষা দফতরের ভর্তির পোর্টালে অ্যাডমিশনের কাজ চলছে দেখবেন। মাননীয় বিচারপতিদ্বয় রায় দিয়েছেন ৩-৪ দিন হয়ে গেল, সেটা এখনও মানা হয়নি। এখন না মানলে বিচারব্যবস্থায় ঠিক হবে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’।
বিজেপি বিধায়কের দাবি, ‘আদালত অবমাননা যদি হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর ভাইপো অথবা ব্রাত্য বসু জেলে যাবেন না। রাজ্যের মুখ্যসচিব, শিক্ষাসচিব, অর্থসচিব জেলে যাবেন। কাজেই জেলে যাওয়ার জন্য তাঁরা তৈরি হন, ব্যাগ গোছান। আপনারা তো মেরুদণ্ড খুলে রেখে নবান্নে বসে আছেন। সেই জন্য আপনাদের এই পরিণতিই হবে’।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের এসএসসির গোটা প্যানেল বাতিল করলেও ‘অযোগ্য’ অথবা ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত নন, এমন শিক্ষকদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর অবধি বিদ্যালয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে চাকরি বাতিলের রায়ই বহাল আছে। রাজ্যের তরফ থেকে তাঁদের মাসিক ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করলেও আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর অবধি তাতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। অন্যদিকে চাকরিহারাদের ভাতা আটকাতে কারা আদালতে গেল, তাঁদের চিহ্নিত করার কথা বলেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।