‘যদি কেষ্ট জেল খাটে, লুটের ভাগ উঠবে লাটে!” কবি মমতাকে কবিতা লিখেই আক্রমণ শুভেন্দুর

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গতকাল প্রাক স্বাধীনতা দিবস অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে তুলোধোনা করার পাশাপাশি নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছুড়ে দেন তিনি। নাম না করে এক নেতার উদ্দেশ্য ‘গদ্দার’ বলে সম্মোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্ষেত্রে তাঁর আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে যে শুভেন্দু ছিলেন, তা বলাবাহুল্য আর এদিন সেই কটাক্ষের জবাবে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা।

এক্ষেত্রে কোনো বিতর্কিত মন্তব্যে না গিয়ে উল্টে সোশ্যাল মিডিয়ায় এদিন একটি কবিতা শেয়ার করেন শুভেন্দু। কবিতা সহ বিজেপি নেতা লেখেন, “পাগলের (সেয়ানা পাগল) প্রলাপ হোক অথবা ভয় পেয়ে ভুল ভাল বকা, শুনে বেশ মজা পেলাম।” এক্ষেত্রে গতকালের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের জবাবে যে তাঁর এহেন কবিতা, তা বুঝতে দেরি হয়নি!

কবিতার প্রতি লাইনেই তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। সম্প্রতি, সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। সেই বিষয়কে সামনে রেখে শুভেন্দু লেখেন, “চোরে চোরে মাসতুতো ভাই,/ কেষ্ট দিদির প্রিয় তাই।/ যদি কেষ্ট জেল খাটে,/ লুটের ভাগ উঠবে লাটে।/ কেন করেছো গ্রেফতার?/ কি এমন করেছে?/ মনে মনে ভয় আবার,/ মুখ খুললেই মরেছে!”

উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দু অধিকারী। পরবর্তীতে নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করেন তিনি। এরপর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যে মামলা করে চলেছে শাসকদল, এহেন অভিযোগ করতে থাকেন বিজেপি নেতা। এদিন সেই বিষয়টিকে সামনে এনে নাম না করে কটাক্ষ করে শুভেন্দু লেখেন, “সব নাটের গুরু ওই ব্যাটা,/ ওর কাছে হেরে, গেছে আমার নাক কাটা।/ কিছুতেই আনতে পারছি না বাগে, বুক ফেটে যায় আমার রাগে।/ দিলাম এত কেস, লেলিয়ে দিলাম পুলিশ,/ উল্টে আমাকেই করে দিচ্ছে পালিশ।/ বলে নাকি দিল্লিতে দিয়ে এসেছে তালিকা,/ কি করি কি করি, আমি তো আর নয় নিষ্পাপ বালিকা।/ আমার ও তো লাগে ভয়,/ কে এবার জেলে যাবে, কে বাইরে রয়?”

শেষে তাঁর সংযোজন, “ঘর দেখবো না বাইরে,/ দলটাই উঠে যায়, হায় রে।/ তাই পার্থ হোক বা কেষ্ট হোক, এবার হাসছে রাস্তার লোক।/ ফুরিয়ে আসছে গলার জোর,/ সবাই জেনে গিয়েছে আমরা চোর।”

উল্লেখ্য, গতকাল বেহালা পশ্চিমে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি অনেক কিছু চোখের সামনে দেখেছি। কার কি ভূমিকা, কে কি করেছে, সব দেখতে পেয়েছি। অনেক সময় এর প্রশংসাও করেছি। তবে একই সঙ্গে আমাকে নিজের বিষও হজম করতে হয়।” এরপরেই তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস দল তৈরির সময় দলে না থাকলেও পরে এসেছে আর ভোটের আগেই গদ্দারি করে পালালো। এখন আমরা জিজ্ঞাসা করতে চাইজ তোমার কয়টা গাড়ি, বাড়ি এবং পেট্রোল পাম্প রয়েছে? মুর্শিদাবাদ থেকে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ায় সব চাকরি তো তুমি দিয়েছো বাবা।” এক্ষেত্রে কারোর নাম না করলেও তাঁর আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে যে শুভেন্দু, সে বিষয়ে মত প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা। এর মাঝেই এবার শুভেন্দুর ছড়া বিতর্ক বহু গুণে বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ad

Sayan Das

সম্পর্কিত খবর