বাংলা হান্ট ডেস্ক : তৃণমূলের (TMC) ইতিহাসে নন্দীগ্রাম আন্দোলন (Nandigram Movement) একটি স্মরণীয় ইতিহাস। এই আন্দোলনই ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তথা তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষমতা দখলের পটভূমিকা রচনা করে। সেই আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে ছিলেন বর্তমান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari)। বিজেপির বৈঠকে সেই সব দিনের কথা তুলে ধরলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। কী ভাবে শূন্য থেকে আজ রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল, তারই ব্যাখ্যা উঠে এসেছে শুভেন্দুর ভাষণে। দুর্গাপুরে চলা বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে উপস্থিত নেতারা জানাচ্ছেন, শুধু তৃণমূল নয়, সিপিএমের বিভিন্ন আন্দোলন দেখেও গেরুয়া শিবিরের শেখা উচিত বলে দাবি করেন শুভেন্দু।
শুক্রবার দুর্গাপুরে দু’দিনের রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক শুরু হয়েছে বিজেপির। প্রথম দিন ছিল রাজ্য পদাধিকারীদের বৈঠক। সেখানেই পরিষদীয় নেতা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার কর্মসমিতির সব সদস্য এবং জেলা সভাপতিদের নিয়ে বসেছে দ্বিতীয় দিনের আলোচনা। এই বৈঠক থেকেই আগামী তিন মাসের জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচি স্থির করবে রাজ্য বিজেপি। আগামী কয়েক মাস দল কোন ধরনের আন্দোলন করবে, মূলত এই বিষয় নিয়েই আলোচনা ছিল শুক্রবারের বৈঠকে। সেখানেই দলকে রাজ্যে কোন পথে এগোতে হবে, তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শুভেন্দু বাংলায় বাম ও তৃণমূলের বিরোধী দল থাকার সময়ের কথা তুলে নিয়ে আসেন।
শুক্রবারের বৈঠকে দিল্লি থেকে পাঠানো এই রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতা উপস্থিত ছিলেন। সুনীল বনশল, মঙ্গল পাণ্ডে, অমিত মালব্য এবং আশা লাকড়া ছিলেন বৈঠকে। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও হাজির ছিলেন। সকলেই দলের আগামী কর্মসূচি কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে বক্তব্য রাখেন। বেশির ভাগ নেতাই লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে সংগঠনকে মজবুত করার জন্য কী কী করা উচিত, তা নিয়ে নিজেদের মতামত দেন। রাজ্য, জেলা থেকে বুথ স্তরে নিয়মিত বৈঠকের প্রস্তাবও আসে। বিজেপির দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই সবের মধ্যেই শুভেন্দু মত প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এখন যা পরিস্থিতি তাতে দলকে বেশি করে রাস্তায় নামতে হবে। আন্দোলনের মধ্যে না থাকলে সংগঠনকে মজবুত করা সম্ভব নয়।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিজেপি ‘নবান্ন অভিযান’ কর্মসূচি নেয়। তা যথেষ্ট সফল হয়েছিল বলেও দাবি করে গেরুয়া শিবির। কিন্তু এর পর থেকে বিজেপিকে আর সে ভাবে আন্দোলনের পথে দেখা যায়নি। দলের সিদ্ধান্ত ছিল, ঘন ঘন বড় মাপের আন্দোলন না করে বুথ স্তরে সংগঠন মজবুত করার দিকে নজর দিতে হবে। গত এক মাস ধরে বিজেপি জেলা ধরে ধরে অঞ্চল সম্মেলন করে চলেছে। বুথ কমিটি গড়ার কাজও চলছে।