‘ক্ষমতায় এলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুলিশকে ডিএ’, নবান্ন অভিযানের পূর্বে আচমকাই পুলিশ-স্তুতি শুভেন্দুর গলায়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘বাংলায় বিজেপি একবার ক্ষমতায় আসলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সকল পুলিশ কর্মীকে ডিএ দেওয়া হবে’, আগামীকাল নবান্ন অভিযানের আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) গলায় শোনা গেল প্রতিশ্রুতি বার্তা। একইসঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে একের পর এক কটাক্ষ শানালেন তিনি।

গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর থেকেই একাধিক সময় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এনে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দেন তিনি। হুগলির পান্ডুয়ায় দলীয় একটি সভায় যোগদান করে ফের একবার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হলেন শুভেন্দুবাবু। পাশাপাশি বাংলার পুলিশ কর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রতিশ্রুতি বার্তা পৌঁছে দিলেন তিনি।

দলীয় সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বর্তমানে পুলিশ কর্মীরা ঠিকমত ডিএ পাচ্ছেন না। একজন কনস্টেবল যেখানে ১০০০০ টাকা করে কম পাচ্ছেন, সেখানে এসআই-এর ক্ষেত্রে সেই পরিমাণ ২০ হাজার টাকা। আমি বলতে চাই, বিজেপি সরকার যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে আরটিজিএস করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সকল ডিএ দেওয়া হবে।” একইসঙ্গে আগামীকাল নবান্ন অভিযান প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা বলেন, “আগামীকাল নবান্ন অভিযান রয়েছে। পুলিশকে বলবো, আপনারা আমাদের আটকাবেন না। আপনাদের বন্ধু শুভেন্দু থাকবে সাতরাগাছিতে। দেখা হবে।”

নবান্ন অভিযানের পূর্বে শুভেন্দুর গলায় হঠাৎ ‘পুলিশ-স্তুতি’ স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্যে সৃষ্টি করেছে। একইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “ভাইপো বলেছিল ও নাকি পাঁচ পয়সাও খায় না। আসলে কয়লা এবং গরু পাচারের টাকা যেমন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ঢোকে, ঠিক তেমনভাবে ওর বউ এবং শালিকাও খায়। দেখুন না, ডিসেম্বরে কি হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের যে সকল লোকেদের কাছে টাকা রয়েছে, তারা সেগুলি লুকিয়ে রাখা শুরু করুন। তবে যদিও এতে বিশেষ কোনো লাভ হবে না। ইডি যেভাবে সব কিছু খুঁজে বের করা আরম্ভ করে দিয়েছে, একমাত্র গঙ্গার জলে টাকা ফেলে দিলে তবেই আপনারা বাঁচবেন।”

উল্লেখ্য, সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রচার শুরু করে দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। সেই উপলক্ষ্যেই সংখ্যালঘু প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “সকল সংখ্যালঘুদের আমি জিজ্ঞাসা করব, আপনারা কি পেলেন? বগটুই, ইসলামপুর? আনিস খান? দিকে দিকে লোকে মারা যাচ্ছেন।” এরপর তিনি বলেন, “২০১৩ সালের পর থেকে পান্ডুয়ায় পঞ্চায়েতের টাকা আত্মসাৎ করা শুরু হয়ে গিয়েছে। ওরা কেবল দুর্নীতি করে চলেছে। এমনকি পান্ডুয়ায় যিনি তৃণমূল বিধায়ক রয়েছেন, উনি এলাকাতেই যান না।”

Untitled design 2022 08 26T144504.148

যদিও শুভেন্দু অধিকারীর এহেন অভিযোগ এক প্রকার উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল শিবির। এদিন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী যে সকল অভিযোগ করে চলেছে, তা মিথ্যা। রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার কারণে এ সকল মন্তব্য। আমাদের নেত্রী রত্না দে নাগ মাসের ২৫ দিন এলাকায় থাকেন। তাছাড়া আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি বলেই শুভেন্দু অধিকারী মিছিল করতে পারছেন। আমরা যদি না চাইতাম, তাহলে উনি মিছিল কিংবা এ সকল বক্তব্য কখনোই রাখতে পারতেন না।”

Sayan Das

সম্পর্কিত খবর