বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলার জনপ্রিয়তম পর্যটনকেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম হল দীঘা। প্রত্যেক মাসে অগুনতি মানুষ সেখানে ঘুরতে যান। আগেই জানা গিয়েছিল, সেখানে পর্যটক টানতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জগন্নাথ ধাম মন্দির (Jagannath Temple) তৈরি করা হচ্ছে। ভোটের আবহে সেই মন্দির নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, পুরীর থেকেও বড় মন্দির বানানো হচ্ছে। এবার এই নিয়ে তাঁকে একহাত নিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
সম্প্রতি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ভিডিও শেয়ার করেন শুভেন্দু। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আপনারা জানেন তো, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মতো বড় মন্দির তৈরি হচ্ছে দীঘায়? কী দেখেছেন? যেদিন উদ্বোধন হবে, যাবেন কিন্তু’। তৃণমূল নেত্রী জানান, ইতিমধ্যেই ঠাকুরও এসে গিয়েছে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের থেকেও এটা আরও বড় মন্দির হয়েছে’।
সারা বিশ্বের অনেকেরই মত বাঙালির প্রাণের শহর উৎকলের শ্রীক্ষেত্র; পুরীর জগন্নাথ ধাম সনাতন ধর্মের অন্যতম পীঠস্থান।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জগন্নাথ অবতারে পুরীর মন্দিরে অধিষ্ঠান করেন, সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের বড় ভাই বলভদ্র এবং ছোট বোন সুভদ্রাও একই আসনে অধিষ্ঠান করেন।পুরীর রথযাত্রা উপলক্ষে… pic.twitter.com/78wJEe1NWz
— Suvendu Adhikari (Modi Ka Parivar) (@SuvenduWB) May 16, 2024
মমতার এই বক্তব্য নিয়েই এবার তোপ দেগেছেন শুভেন্দু। পুরীর মন্দিরের ঐতিহ্য তুলে ধরে বিজেপি বিধায়ক এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘সারা বিশ্বের অনেকেরই মতো বাঙালির প্রাণের শহর উৎকলের শ্রীক্ষেত্রে; পুরীর জগন্নাথ ধাম সনাতন ধর্মের অন্যতম পীঠস্থান। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জগন্নাথ অবতারে পুরীর মন্দিরে অধিষ্ঠান করেন। সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের বড় ভাই বলভদ্র এবং ছোট বোন সুভদ্রাও একই আসনে অধিষ্ঠান করেন। পুরীর রথযাত্রা উপলক্ষ্যে কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয় রাজপথ, রথ টানার জন্য জনপ্লাবন সৃষ্টি হয় প্রতি বছর’।
আরও পড়ুনঃ নির্বিচারে গ্রেফতার বন্ধ! ED-র ক্ষমতা কেড়ে নিল সুপ্রিম কোর্ট, বিরাট ধাক্কা কেন্দ্রীয় এজেন্সির
শুভেন্দু লেখেন, বহু শতক আগে তৈরি এই অলৌকিক মন্দিরের সঙ্গে প্রচুর আশ্চর্যজনক ঘটনা জড়িত, বিজ্ঞানও তার ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম হয়নি। বিজেপি বিধায়ক লিখেছেন, মন্দিরের চূড়ায় যে পতাকা লাগানো থাকে, সেটা সর্বদা হাওয়ার বিপরীত দিকে ওড়ে। শুধু তাই নয়, এই মন্দিরের কোনও ছায়াও দেখা যায় না।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, ‘মন্দিরের চূড়ায় একটি চক্র লাগানো রয়েছে, যে কোনও প্রান্ত থেকে ওই চক্রের দিকে তাকান, মনে হবে চক্রটি আপনার দিকেই ঘোরানো। চক্রটির ওজন প্রায় ১ টন। ১২ শতকে মন্দির নির্মাণের সময় চূড়ায় কীভাবে বসানো হয়েছিল, তা এক রহস্য। কারণ সেই সময় প্রযুক্তি কতখানি উন্নত ছিল তা নিয়ে সংশয় রয়েছে’।
এরপর সরাসরি মমতাকে নিশানা করে শুভেন্দু লেখেন, ‘জনশ্রুতি, লোকগাঁথা, পৌরাণিক কাহিনী এবং ইতিহাসের আবরণে মোড়া প্রাচীন ধর্মীয় তীর্থক্ষেত্র; পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের থেকেও নাকি ‘বড় মন্দির’ বানাচ্ছেন মাননীয়া! দম্ভ যখন মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে, মানুষ তখন আবোল তাবোল বকে। মহাপ্রভু জগন্নাথ দেব ওনাকে সুবুদ্ধি প্রদান করুন এই প্রার্থনা করি। জয় জগন্নাথ’।