বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এদিন রাম মন্দির সম্পর্কে মমতার মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন নন্দিগ্রামের (Nandigram) বিধায়ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো লম্বাচওড়া পোস্ট করেন তিনি। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল রাজনৈতিক দুনিয়ায়।
কী বলেন মমতা? এদিন এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে রাম মন্দির ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা একটা মন্দির করছে, আমিও তো তারকেশ্বর করেছি। আমি তো কালীঘাট করছি। আমি তো দক্ষিণেশ্বর করেছি। আমি তো তারাপীঠ করেছি। আমি তো পাথরচাপরি করেছি। আমি তো কঙ্কালীতলা করেছি।’
মমতার মন্তব্যের জবাব দিয়ে শুভেন্দু লেখেন, ‘কোন ব্যক্তি যখন নিজেকেই সবচেয়ে উচ্চস্থানে বসিয়ে দেন, তখন ধর্ম অধর্মের জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। হিন্দুধর্মের পীঠস্থান নিয়ে এমন বিভ্রান্তিকর ও সর্বৈব মিথ্যা বচন কেউ উচ্চারিত করতে পারে তা অকল্পনীয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাই অবগত রইলেও কিছু অন্ধ তোলামূলি যাদের কাছে ওদের রানিমার কথাই সর্বশ্রেষ্ঠ সত্য, তাদের উদ্দেশে এই ইতিহাস তুলে ধরছি।
এরপরই শুভেন্দু রীতিমতো দিনক্ষণ হিসেব করে তুলে আনেন ইতিহাসকে। তিনি লেখেন, ‘১৬৮ বছর আগে ১৮৫৫ সালের মে মাসের ৩১ তারিখ দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন লোকমাতা রানী রাসমণি দেবী। রানী রাসমণি দেবী, অন্নপূর্ণা পুজোর জন্য কাশীযাত্রার আয়োজন করছিলেন, এমন সময় জনশ্রুতি অনুসারে, রওনা হওয়ার আগের রাতে উনি মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। মা ওনাকে বলেন, কাশী যাওয়ার প্রয়োজন নেই, গঙ্গাতীরেই একটি সুন্দর মন্দিরে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো করতে। এই স্বপ্নাদেশের পর, রানী রাসমণি দেবী গঙ্গাতীরে জমি ক্রয় করেন এবং মন্দির নির্মাণ শুরু করেন। এই মন্দিরের ইতিহাসের সঙ্গে সাধক রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, মা সারদা দেবী এবং বিশ্ব বরেণ্য সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ সম্পৃক্ত হয়ে রয়েছেন।’
এর পরই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তারকেশ্বর মন্দিরের ইতিহাস তুলে আনেন। তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘তারকেশ্বর মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন এক অবাঙালি। পরম শিবভক্ত শ্রী বিষ্ণুদাস উত্তরপ্রদেশ থেকে হুগলিতে এসে বসবাস শুরু করেন। তারকেশ্বরের শিবলিঙ্গ কেউ স্থাপন করেননি, তাই তারকেশ্বরের শিবলিঙ্গকে বলা হয় ‘স্বয়ম্ভূ লিঙ্গ’।
শুভেন্দু আরও লেখেন, ‘বিষ্ণুদাসের ভাই জঙ্গলে একটি কালো পাথর দেখতে পান। গরুরা প্রতিদিন এসে ওই খণ্ডের উপর দুধ দান করে যায় ৷ সেকথা উনি বিষ্ণুদাসকে জানান। পরে বিষ্ণুদাস স্বপ্নাদেশে ওই পাথরটিকে শিবজ্ঞানে পুজো করার নির্দেশ পান, তাই এর পরে ছোট একটি মন্দির গড়ে পাথরটিকে পুজো করতে শুরু করেন তিনি। তৈরি হয় মন্দির। মহাদেবের তারকেশ্বর রূপের নামে নামকরণ হয় মন্দিরটির। বহুবার পুনর্নির্মাণ হয়েছে এই মন্দিরের। ১৭২৯ সালে মল্লরাজারা মন্দিরটির সংস্কার করেন। বর্তমানে যে মন্দিরটি দেখা যায় তা মল্লরাজাদেরই তৈরি। স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে মল্লরাজ ভারামল্ল মন্দির পুনর্নির্মাণ করেন ৷’