শ্যালক, শ্যালিকা এমনকি ড্রাইভারকেও চাকরি দিয়েছেন মন্ত্রী পরেশ! ৩১ জনের তালিকা দিলেন শুভেন্দু

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুল সার্ভিস কমিশন সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ক্রমশ একের পর এক তথ্য সামনে উঠে আসছে। সম্প্রতি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর নাম পর্যন্ত জড়িয়ে পড়েছে এই দুর্নীতিতে। এমনকি কিছুদিন পূর্বে নিজের মেয়েকে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এবং এরপরই সিবিআই তলবের মুখে পড়তে হয় তাঁকে।

এর মাঝেই এদিন টুইটে পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি করে বসলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরপর পাঁচটি টুইটের মাধ্যমে তৃণমূল নেতার পরিবারের মোট 31 জন সদস্যের একটি তালিকা পেশ করেন বিজেপি নেতা। সেই 31 জন সদস্যই বেআইনিভাবে চাকরিতে সুযোগ পেয়েছে বলে দাবি করেন শুভেন্দু।

উল্লেখ্য, পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ নতুন নয়। রাজনৈতিক কেরিয়ারের শুরুতে সিপিএম দলে যুক্ত ছিলেন তিনি। তৎকালীন সময়ে রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে তৃণমূল দলে যোগ দিয়ে বিধানসভা ভোটে জয়লাভ করেন এবং এরপর শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। তবে বাম আমল থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে নিজের পরিবারের সদস্যদের চাকরি পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠতে থাকে।।

বলে রাখা ভালো, বর্তমানে এসএসসি তালিকায় নাম না থাকা সত্বেও নিজের মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে চাকরিতে ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন এই তৃণমূল নেতা। সিবিআই অফিসে হাজিরা দেওয়ার পাশাপাশি সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ এই মামলাটি ওঠে এবং তৎক্ষনাৎ মন্ত্রীকন্যাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় আদালত। এর পাশাপাশি চাকরি থেকে পাওয়া সমস্ত বেতনও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

তবে শুধু মেয়েকে চাকরি করে দেওয়াই নয়, এরপর থেকে ছেলে সহ পরিবারের একাধিক সদস্যকে বেআইনিভাবে সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। আর এবার শুভেন্দু অধিকারীর টুইট তাঁর অস্বস্তি আরো বৃদ্ধি করলো বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

এ দিন পরপর পাঁচটি টুইট করে মোট 31 জন সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করেন শুভেন্দু, যার বিবরণ রইলো নিচে:
স্ত্রী – মীরা অধিকারী (স্বাস্থ্য দপ্তর), মেয়ে – অঙ্কিতা অধিকারী (বরখাস্ত), ছেলে – হীরক জ্যোতি অধিকারী (ডাক্তার), ভাই – অখিল অধিকারী (ক্লার্ক), ভাইবউ – সাধনা অধিকারী (স্বাস্থ্য), ভাইঝি – করমুক্তা অধিকারী (প্রাইমারি), ভাইঝি – লতা অধিকারী মন্ডল (খাদ্য দপ্তর), ভাইপো – বেন্টু অধিকারী (স্কুল ক্লার্ক), ভাইপো – সেন্টু অধিকারী (প্রাইমারী), ভাইপো – হরিপদ অধিকারী (প্রাইমারী), ভাইপো – জয়দেব অধিকারী (খাদ্য দপ্তর), বোন – ছায়া অধিকারী (ICDS), বোন – মায়া অধিকারী (ICDS), বোন জামাই – শৈলেন দাস (শিক্ষক), বোন জামাই – শ্যামল সরকার (শিক্ষক)।

শ্যালিকার মেয়ে – নুপুর রায় বর্মন (প্রাইমারী), শ্যালিকার ছেলে – রামমোহন রায় (খাদ্য দপ্তর), শ্যালিকার মেয়ে জামাই – হরিশ্চন্দ্র রায় (হাই স্কুল), শ্যালকের ছেলে – সরেন রায় (প্রাইমারী), শ্যালকের ছেলে বউ – পর্ণা সরকার রায় (প্রাইমারী), শ্যালক – মনোরঞ্জন রায় (কলকাতা পুলিশ)।

শ্যালক – উদ্ভব রায় (বিডিও অফিস), শ্যালিকা – হীরা রায় (pwd), শ্যালিকা – মায়া রায় (icds), মামাতো ভাই – নিরঞ্জন রায় (কৃষি দপ্তর), পিসতুতো ভাই – ভবেশ্বর রায় (প্রাইমারি), ভবেশ্বর রায়ের দুই মেয়ে (প্রাইমারী), শ্যালিকার ছেলে – মৃণাল রায় (প্রাইমারী), মৃনালের স্ত্রী (প্রাইমারী)।

তবে এই তালিকার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল দল অবশ্য শুভেন্দুর দাবি খারিজ করে দিয়েছে বলে খবর।

Sayan Das

সম্পর্কিত খবর