বাংলাহান্ট ডেস্ক : সোমবার বিধানসভায় নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল পশ্চিমবঙ্গ। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরই মেতে উঠতে দেখা গেল রক্তক্ষয়ী হাতাহাতিতে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই সাসপেন্ড করা হয় শুভেন্দু অধিকারী সহ পাঁচ বিজেপি বিধায়ককে। তার পরই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রথমবার মুখ খুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন তিনি বলেন, ‘মুসলিম মহিলাদের আর মুসলিম মেয়েকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আমরা তার প্রতিবাদ করেছি, তাই সাসপেন্ড হয়েছি। এর থেকে খুশির খবর আর কী হতে পারে। কোনও ধিক্কার নয়, লড়াই নয়, আমাদের সাহস আরও বেড়ে গিয়েছে। আমরা যারা মুসলিম ভোট পাইনি, তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। আদিবাসী, রাজবংশী, হিন্দু বিধায়কদের বহিষ্কার করেছে।’
সোমবার সকাল থেকেই তোলপাড় বিধানসভা। বগটুই গণহত্যা কাণ্ডের প্রতিবাদে বিধানসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা। স্পিকার তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করলে রোষের মুখে পড়তে হয় তাঁকেও। স্পিকারকে ঘিরে তৈরি করা হয় একটি মহিলা নিরাপত্তারক্ষীদের একটি বেষ্টনী। বিজেপির মহিলা বিধায়করা ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই বেষ্টনি ভাঙার চেষ্টাও করেন। এরপরই জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে দিতে বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান বিজেপি বিধায়করা। তারপরই তৃণমূল বিধায়ককের সঙ্গে হাতাহাতি বাঁধে বিজেপি বিধায়কদের। হাতাহাতি, কিল, চড়, ঘুঁষি থেকে গালিগালাজ চলে সবই।
সেই ধস্তাধস্তিতে জামা ছিঁড়ে যায় বিজেপির পারিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গার। চশমা ভেঙে যায় এক বিধায়কের। নাক ফেটে রক্তারক্তি বাঁধে চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের। অসিতবাবুর সরাসরি অভিযোগ, বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই মেরে নাক ফাটিয়ে দিয়েছেন তাঁর। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে আহত তৃণমূল নেতার।
এই ঘটনার জেরে শুভেন্দু অধিকারী সহ পাঁচ বিজেপি বিধায়কের সাসপেণ্ডের প্রস্তাব দেন ফিরহাদ হাকিম। সেই মতন সাসপেন্ড করা হয় শুভেন্দু অধিকারী, মনোজ টিগগা, দীপক বর্মা, নরহরি মাহাতো এবং শঙ্কর ঘোষকে। এই ঘটনার প্রতিবাদে আবারও রাস্তায় নামেন বিজেপি বিধায়করা। এদিন সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে করা হয় মিছিলও।
ঘটনার জেরে যে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি তা বলাই বাহুল্য।