বাংলাহান্ট ডেস্ক : একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের হটস্পট ছিল নন্দীগ্রাম। এই কেন্দ্রেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম একদা মুখ্যমন্ত্রীর ডান হাত শুভেন্দু অধিকারীর লড়াই দেখেছিল রাজ্যবাসী। বিতর্কের যেন শেষই নেই এই একটি এলাকাকে ঘিরে। প্রচার থেকে শুরু করে ফলাফল সবেতেই একের পর এক চরম দিয়েছে অগ্নিগর্ভ নন্দীগ্রাম।
গত বছরের ২ মে। বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা সেদিন। সকাল থেকে কোনও আপডেটই পাওয়া যাচ্ছিল না নন্দীগ্রামের। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রায় সময়াত যোগাযোগই। সন্ধ্যে নাগাদ খবর আসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতে গিয়েছেন সেখানে। কিন্তু তার মাত্র কিছুক্ষণের মধ্যেই জানানো হয়, মমতা নয় শুভেন্দুর দখলেই নন্দীগ্রাম। ১৯৫৬ ভোটে তৃণমূল নেত্রীকে হারিয়ে নন্দীগ্রামের গদিতে বসেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
যদিও এই হারকে কোনও ভাবেই মেনে নেননি মমতা। একাধিক বার তিনি অভিযোগ তুলেছেন নন্দীগ্রামে কারচুপি এবং ষড়যন্ত্রের। তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগও আনেন তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে। মমতার দাবি, ওই কেন্দ্রে তাঁকে হারানোর জন্য ‘অ্যাডজাস্টমেন্ট’ করা হয়েছিল। কিন্তু কে করেছিলেন এই বোঝাপড়া তা নিয়ে অবশ্য কখনওই মুখ খোলেননি মুখ্যমন্ত্রী। এবার এই নন্দীগ্রামের ভোট প্রসঙ্গেই বিস্ফোরক দাবি করতে দেখা গেল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জয়প্রকাশ মজুমদারকে।
সম্প্রতি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন দুই নেতাই। এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন যে সেদিন বিকেলে শুভেন্দু খোদ তাঁকে ফোন করে জানান যে নন্দীগ্রামে হেরে গিয়েছেন তিনি। তারপর আবার কিভাবে সেখানে জিতে গেলেন শুভেন্দু তা জানা নেই বলেই দাবি করেছেন রাজীব।
অন্যদিকে এই অভিযোগে গলা মিলিয়েছেন সদ্য ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেওয়া জয়প্রকাশ মজুমদারও। তিনি বলেন, ‘২মে বিকেলে বিজেপি মুখপাত্র হিসেবে শুনশান বিজেপি কার্যালয় থেকে আমিই সাংবাদিক সম্মেলন করি। সেখানে আমি জানাই মাননীয়া নন্দীগ্রামে জিতে গিয়েছেন। আমাদের প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু পরে জানতে পারি অন্য ফল হয়েছে। আমি যখন শুভেন্দুকে বলি তুমি তো হেরে গিয়েছিলে, আবার জিতলে কী ভাবে? জবাবে শুভেন্দু রহস্যময় হাসি হেসে বলেন অনেক কিছু করতে হয়েছে।’
তৃণমূলের এই দাবিকে কার্যতই উড়িয়ে দিয়েছে পদ্ম শিবির। বিজেপির দাবি, দিদিমণির কাছে নম্বর বাড়াতেই এহেন আজগুবি গপ্প ফাঁদছেন ওই দুই নেতা। প্রসঙ্গত নন্দীগ্রামের এই মামলা গড়িয়েছে হাইকোর্ট অবধি। ১০ মাস পেরোলেও এখনও ঝুলে সেই মামলা। শেষমেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এই ‘টানটান থ্রিলারের ক্লাইম্যাক্স’ সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী।