বাংলা হান্ট ডেস্ক: বয়সের পরিসংখ্যানে তিনি নেতাজির চেয়ে পাঁচ মাসের বড়। খেলাধুলাও করেছেন তাঁর সাথে। কৈশোরের সেই সব স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হলেন স্বামী শিবানন্দ। ১৮৯৬ সালের ৮ আগস্ট বাংলাদেশের সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বর্তমানে তাঁর বয়স ১২৫ বছর।
স্বামী শিবানন্দ এখন থাকেন বেনারসের অসিঘাটের কাছে কবীর নগরে। বিশ্বের “প্রবীণতম” এই ব্যক্তির আধার কার্ড থেকে শুরু করে পাসপোর্ট সবেতেই উল্লেখ রয়েছে জন্ম তারিখের। সেখানেই তাঁর বয়স সম্পর্কে নিশ্চিত হচ্ছেন সবাই। এদিকে, ১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি ওড়িশার কটকে জন্মগ্রহণ করেন নেতাজি। স্বাভাবিকভাবেই স্বামী শিবানন্দ নেতাজির জীবিত থাকা নিয়েও মত পোষণ করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন,”আমি যদি এই বয়সে বেঁচে থাকতে পারি, তাহলে নেতাজি পারবেন না কেন?’’ ১৯১০-১১ সালে প্রায় সমবয়সী কিশোর সুভাষের সঙ্গে তাঁর সময় কেটেছিল। তিনি জানান, “অনেকদিন আগের কথা তো, সবটা মনে নেই। আমিও কিছুদিন এলগিন রোডে ছিলাম। তখন বয়স চোদ্দো কি পনেরো। এক পাড়ায় থাকার সুবাদে বেশ কিছুদিন ওঁর সঙ্গে খেলাধুলা করার সুযোগ হয়েছিল।’’
পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন যে, “প্রাকৃতিক নিয়মে যে এত বছর বেঁচে থাকা যায়, তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ আমি। তাহলে বয়সের ভারে নেতাজির বেঁচে থাকা অসম্ভব, এই প্রশ্নটা কেন বারবার তোলা হচ্ছে? নিঃস্বার্থ সেবা ও যোগের কল্যাণে আমি এত বছর সশরীরে আছি। নেতাজিও তো যোগসিদ্ধ পুরুষ, সেবার মূর্ত প্রতীক। তাই, আমি বিশ্বাস করি, নেতাজি এখনও সশরীরে আছেন।’’
তবে, কৈশোরের কিছুটা সময় একসঙ্গে কাটলেও পরবর্তীকালে নেতাজির সঙ্গে আর স্বামী শিবানন্দের সাক্ষাৎ হয়নি। যদিও, তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনার খবর কানে এলেও তিনি নেতাজির মৃত্যুর বিষয়টি বিশ্বাস করেননি। বরং, তিনি এখনও মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন যে, তাঁর মতোই ১২৫ বছর পেরিয়ে কোথাও আত্মগোপন করে রয়েছেন নেতাজি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯০৯ সালে সুভাষচন্দ্র বসুর বাবা জানকীনাথ বসু এলগিন রোডের বাড়িটি তৈরি করেন। তখন থেকেই কলকাতায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল সুভাষ ও তাঁর ভাইদের। এই বাড়ি থেকেই ১৯৪১ সালের ২৬ জানুয়ারি ছদ্মবেশে ব্রিটিশদের চোখে ধুলো দিয়ে বিদেশের পথে বেরিয়ে পড়েছিলেন নেতাজি। কাবুল, মস্কো হয়ে এপ্রিলে তিনি পৌঁছে যান জার্মানিতে।