বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সুবিধার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তরফ থেকে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে বহু প্রকল্প, স্কিম। এমনই একটি প্রকল্প হল স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi Card)। এর ফলে উপকৃত হয়েছেন অগুনতি মানুষ। এবার এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডই নারী পাচার চক্রের (Women Trafficking) মূল হোতাদের ধরিয়ে দিতে সাহায্য করল।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামে (Jhargram)। সেখানে প্রেম এবং বিয়ের টোপ দিয়ে নাবালিকাদের যৌন পেশায় নামিয়ে এসে পাচার করে দেওয়া হতো। ধীরে ধীরে সেখানে এমন একটি চক্র তৈরি হচ্ছিল। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের হাতে আগেই সেই চক্রের মূল মাথারা গ্রেফতার হয়েছিল। এবার ঝাড়গ্রামের বিশেষ পকসো আদালত তাঁদের সাজা শোনালো।
নারী পাচার চক্রের মূল হোতা অভিযোগে যারা গ্রেফতার হয়েছিলেন তাঁরা হলেন পিঙ্কি ওরফে সোনালি বিশাল, লাদেন ওরফে কৌশিক সিংহ, বাবর বেগ এবং অজয় দাস। ঝাড়গ্রামের বিবেকানন্দপল্লিতে থাকে পিঙ্কি। অনুদিকে কৌশিকের বাড়ি পুরাতন ঝাড়গ্রামে। বাবর লালগড়ের যশপুর এবং অজয়ের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া থানা এলাকায়। পুলিশের দাবি, এই নারী পাচার চক্রের মূল মাথাই হল পিঙ্কি।
আরও পড়ুনঃ TET পাশ হলেই চিন্তা শেষ! চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিরাট সুখবর, দারুণ উদ্যোগ নিল SSC!
নাবালিকাদের অপহরণ, ধর্ষণ এবং পাচারের অভিযোগ এই ৪ জনকে ২০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার বিশেষ আদালতের বিচারপতি চিন্ময় ভট্টাচার্য এই সাজা ঘোষণা করেন। জানা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ছবি দেখেই ওই ৪ অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট ঝাড়গ্রাম তগানায় একজন নাবালিকাকে অপহরণের অভিযোগ জানানো হয়। সেই নাবালিকার মা জানান, ১৬ আগস্ট থেকে তাঁর মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর ২৬ আগস্ট ঝাড়গ্রাম স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে সেই মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর উঠে আসে নারী পাচার চক্রের কথা। এরপর জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সিট তৈরি করা হয়।
পুলিশ জানাচ্ছে, ওই নাবালিকা একজনের নাম জানতো। বাকিদের চিহ্নিত করতে সন্দেহভাজনদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ছবি দেখানো হয়। সেখান থেকে তাঁদের চিহ্নিত করে ওই নাবালিকা। এরপরেই এক এক করে গ্রেফতার হয় এই চক্রের মূল হোতারা। এবার তাঁদের সাজা শোনালো আদালত। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন, ‘FIR থেকে সাজা ঘোষণা, আমরা মাত্র ১০ মাসে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। নারী পাচারের ঘটনায় এত দ্রুত সাজা ঘোষণা ঘটনা গোটা রাজ্যে আর কোথাও নেই’।