বাংলাহান্ট ডেস্ক: আজ মাতৃদিবস। মায়ের ঋণ তো কখনও শোধ করা সম্ভব নয়। শুধু এই দিনে সব মায়েদের প্রতি একটু বিশেষ সম্মান, কৃতজ্ঞতা জানানোই যায়। বলা হয়, সন্তানের জন্য মায়েরা সব করতে পারেন। তবে কেবলমাত্র নিজের সন্তান নয়, সবার সন্তানের জন্যই উপচে পড়ে মায়ের ভালবাসা। এই কথাটাই ফের প্রমাণ করেছেন এই মা। পেশায় তিনি বিমান চালিকা। বাড়িতে ছোট সন্তান রেখেও করোনা বিধ্বস্ত বিদেশে উদ্ধারকার্য চালাতে পিছপা হননি তিনি।
ক্যাপ্টেন, স্বাতী রাওয়াল (swati rawal), পেশায় এয়ার ইন্ডিয়ার (air india) পাইলট। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও করোনা সংক্রামিত রোম থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়েছিলেন তিনি। কর্তব্যনিষ্ঠ পাইলট হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন মা ও। ঘরে রয়েছে তাঁর পাঁচ বছরের ছোট সন্তান। তা সত্ত্বেও সব বিপদ উপেক্ষা করে নিজের কর্তব্যে অবিচল থেকেছেন স্বাতী।
স্বাতীর বাবা এস ডি রাওয়াল বন দফতরের আধিকারিক। কর্তব্যনিষ্ঠ হওয়ার শিক্ষা বাবার থেকেই পেয়েছেন তিনি। আদিবাড়ি গুজরাটের ভাবনগরে হলেও কর্মসূত্রে দিল্লির বাসিন্দা স্বাতী। ছোট থেকেই তাঁর স্বপ্ন ছিল ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট হওয়ার। কিন্তু সেই সময় মহিলাদের বায়ুসেনার পাইলট হওয়ার অনুমতি ছিল না।
তবে হাল ছাড়েননি স্বাতী। রায়বরেলি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০০৬ এ কাজ শুরু করেন এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট হিসাবে। কিন্তু মন থেকে বায়ুসেনার বিমান চালক হওয়ার ইচ্ছাটা একেবারেই মরে যায়নি। দীর্ঘদিন পর সুযোগটা আসে অপ্রত্যাশিত ভাবেই। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ থেকে স্বাতীকে জিজ্ঞাসা করা হয় রোম থেকে ভারতীয়দের উদ্ধারকার্যে যোগ দিতে পারবেন কিনা তিনি।
এমন সুযোগ পেয়ে দুবারও ভাবেননি স্বাতী। ২২জন ক্রুকে নিয়ে বোয়িং ৭৭৭ বিমান নিয়ে করোনা বিধ্বস্ত রোমে পাড়ি দেন স্বাতী ও ক্যাপ্টেন রাজা চৌহান। ২৬৩ জন ভারতীয়কে উদ্ধার করে ২২ মার্চ ভারতে ফেরেন তাঁরা। রোমের পাশাপাশি করোনার আতুঁড়ঘর চিনের উহান থেকেও ভারতীয়দের উদ্ধার করে এয়ার ইন্ডিয়া।
স্বাতী সহ এয়ার ইন্ডিয়ার রেসকিউ টিমের প্রশংসা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও টুইট করে শুভেচ্ছা জানান তাঁদের। তবে এটাই প্রথমবার নয়। এর আগে ২০১০ এ মুম্বই থেকে নিউ ইয়র্ক পাড়ি দিয়েছিলেন স্বাতী। শুধুমাত্র মহিলা কর্মীরাই ছিলেন সেই উড়ানে। মেয়ের এই সাফল্যে গর্বিত বাবা এস ডি রাওয়ালও।