বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কার্যত দেখতে গেলে তালিবানদের জন্য এখন ‘নেপোলিয়নের ওয়াটারলু’ হয়ে উঠেছে হিন্দুকুশ পর্বতের পাদদেশে পঞ্জশির এলাকা। গোটা আফগানিস্তান দখল করে একদিকে যখন এই মুহূর্তে সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখছে তারা। তখনই অন্যদিকে তালিবানদের হাত থেকে শেষ দুর্গ হিসেবে পঞ্জশিরকে রক্ষা করে রেখেছেন আহমেদ মাসুদ এবং আমরুল্লাহ সালেহর সেনা। কার্যত এর আগেও তাদেরকে হুমকি দিতে পিছপা হয়নি তালিবান। এমনও জানানো হয়েছে চার ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে ফল ভুগতে হবে।
কিন্তু সেই হুমকিতে দমে যাননি সালেহ কিম্বা মাসুদ। বরং ৩০০ তালিবানকে নিকেশ করে ফের একবার নিজেদের ক্ষমতা বুঝিয়ে দিয়েছেন তারা। সালেহ রবিবারই জানিয়েছিলেন পঞ্জশিরের প্রবেশপথ আনদারাব উপত্যকার জঙ্গলে তালিবানরা বিশাল বাহিনী নিয়ে আটকে রয়েছে৷ ইতিমধ্যেই প্রতিরোধ বাহিনী (মাসুদ এবং সালেহর গড়ে তোলা বাহিনী) সালাং হাইওয়ে আটকে দিয়েছে। তালিবানরা এগোলে দেখে নেবেন তারা। কার্যত এবার অন্যরকম চাপ সৃষ্টি করার পথে হাঁটল তালিবান। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে সমস্ত যোগাযোগ। খাবার-দাবার জ্বালানি ঢুকতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে আনদরাব উপত্যাকায়।
পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন সালেহ নিজেই।
একটি টুইটে তিনি লেখেন, “আনদারাব উপত্যকায় তালিবানরা খাবার আর জ্বালানি ঢুকতে বাধা দিচ্ছে ৷ এখানকার মানুষ চরম দুরবস্থায় রয়েছেন ৷ হাজার হাজার মহিলা আর শিশু পাহাড়ে পালিয়ে গিয়েছে ৷ গত দু’দিন ধরে তালিবানরা শিশু আর প্রাপ্তবয়স্কদের অপহরণ করে তাদের প্রতিটি বাড়ির দরজায় তল্লাশি চালানোর কাজে নিযুক্ত করেছে ৷” অন্যদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠনগুলিও জানিয়েছে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র এবং খাবার পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না আফগানিস্তানে। আর তাই ‘হিউম্যানিটেরিয়ান এয়ার ব্রিজ’ তৈরি করা দরকার অবিলম্বে।
Talibs aren't allowing food & fuel to get into Andarab valley. The humanitarian situation is dire. Thousands of women & children have fled to mountains. Since the last two days Talibs abduct children & elderly and use them as shields to move around or do house search.
— Amrullah Saleh (@AmrullahSaleh2) August 23, 2021
কার্যত এখন সারা বিশ্বজুড়ে শান্তির বার্তা প্রচার করতে মরিয়া তালিবান। তারই মধ্যে এ ধরনের ঘটনা নিশ্চয়ই অস্বস্তি বাড়াবে তাদের। কারণ তাদের মুখে এবং মুখোশের ফারাক যে কতখানি এ ধরনের ঘটনা থেকে তা বুঝে নিতে অসুবিধা হয়না। এই মুহূর্তে আফগানিস্থানে একমাত্র লড়াইয়ের মশাল জ্বালিয়ে রেখেছেন আমরুল্লাহ সালেহ এবং আহমেদ মাসুদরাই। আফগান সেনার অনেকেই ইতিমধ্যে যোগ দিয়েছেন তাদের দলে। এখন শেষ পর্যন্ত পঞ্জশির কতদিন অজেয় থাকে সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।