বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রায়শই আমরা দেখি ফ্রড কলের মাধ্যমে কেউ কারোর সাথে প্রতারণা করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এই প্রতারণা কখনো ব্যাঙ্কের কর্মী সেজে করা হয়, আবার কখনো আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া নামে করা হয়। আবার পৃথিবীতে কিছু ভালো মানুষও আছে, যারা প্রচুর প্রচুর টাকা পেয়েও মালিকের হাতে বিনা কোন শর্তে ফেরত দিয়ে দেয়। যদিও এই ধরনের মানুষের অভাব অনেক।
এর আগে আমরা শুনেছি কখনো গরিব রিক্সা চালক অথবা অটো, টোটো চালক লক্ষ লক্ষ টাকা ভর্তি ব্যাগ পেয়েও লোভ না করে মালিকের হাতে তুলে দিয়েছেন। তাঁদের প্রশংসাও হয়েছে দেশ জুড়ে। সেইরকমই এক ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকলা তারা মায়ের ভূমি তারাপীঠ। বীরভূমের তারাপীঠে একটি ছোট পূজার সামগ্রীর দোকানে ফুলের মালা বিক্রি করে দিন চালায় বীরভূমের বাসিন্দা সাগর মণ্ডল নামের এক যুবক। এলাকায় নিরীহ ও সৎ যুবক নামেই পরিচিত সে। ইনকাম অফ সোর্স খুবই কম। কিন্তু নিজের আদর্শ থেকে কোনদিনও বিচ্যুত হয়নি। এছাড়াও সাগর নামের ওই যুবক এলাকায় বিজেপি কর্মী এবং হিন্দুত্ববাদী চেহারা হিসেবে পরিচিত।
গতকাল সাগর মণ্ডলের সাথে এমন এক ঘটনা ঘটে গেল, যার ফলে চারিদিকে ওনাকে নিয়ে প্রশংসা হয়ে চলেছে। মল্লারপুর এলাকার বিজেপির একনিষ্ঠ কর্মী হিসাবে মানুষের কাছে পরিচিত সাগর মণ্ডল পেশায় একজন দোকান কর্মচারী। গতকাল সন্ধ্যে ৬ঃ৩০ নাগাদ সাগরের মোবাইলে একটি ম্যাসেজ আসে যে, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা জমা হয়েছে। ওই ম্যাসজে প্রেরকের নামও লেখা ছিল।
প্রথমে সাগর ওই টাকা কেন আসল কিছু বুঝতে পারেনা। পরে প্রেরক অনুপ কুমার চৌধুরী সাগরকে তাঁর নাম্বারে ফোন করে জানায় যে, সে ভুল করে তাঁর নাম্বারে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে। এবং অনুপ তাঁকে সেই ১০ হাজার টাকা ফেরত পাঠানোর জন্য আবেদনও করেন। সাগরও দেরি না করে, ফোন কেটে সাথে সাথে অনলাইন মানি ট্র্যান্সফার অ্যাপ PhonePe এর মাধ্যমে অনুপ কুমার চৌধুরীকে সমস্ত টাকা ফেরত দিয়ে দেন।
https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=142527813698077&id=100038225765668
সাগর মন্ডল খুবই নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে অন্যের দোকানে কাজ করে আর্থিক দূরবস্থার সাথে লড়াই করে বয়ষ্ক বাবা এবং অসুস্থ মায়ের দেখাশোনার দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। সে ওই ১০ হাজার টাকা ফেরত না দিয়ে নিজের মা বাবার রোগের চিকিৎসা করাতেই পারত। কিন্তু সেটা না করে সে মানবতার নিদর্শন সৃষ্টি করে সসমস্ত টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছে। এরকম সহৃদয় মানুষকে আমরা জানাই কুর্নিশ। এরকম মানুষের জন্যই এখনো পৃথিবীতে মানবতা বেঁচে আছে।