বাংলাহান্ট ডেস্ক: লেখিকা তসলিমা নাসরিনের (Taslima Nasrin) নামের সঙ্গে ‘বিতর্ক’ শব্দটা ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। তিনি চাইলেও বিতর্ক পিছু ছাড়ে না তাঁর। শুধু কাগজ কলম নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায়ও মতামত প্রকাশ করতে ভালবাসেন তিনি। আর মনের কথা মনের মতো করে জানাতে গিয়েই তিনি আমন্ত্রণ জানিয়ে ফেলেন বিতর্ককে। এবার যেমন তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে ‘বডি শেমিং’ এর অভিযোগ।
কারোর শারীরিক ত্রুটি নিয়ে মন্তব্য খুব একটা শ্রুতিমধুর নয়, মনের সংকীর্ণতারও পরিচয় দেয় বলে মত অনেকের। এই ব্যাপারটাই এখন আরো বৃহদাকারে ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। কারোর শারীরিক ত্রুটি, গায়ের রঙ, অঙ্গ প্রত্যঙ্গের আকার নিয়ে ঠাট্টা, সমালোচনা শোভনীয় নয়। এই ‘বডি শেমিং’ নিয়ে আগের থেকে এখন অনেকটাই সোচ্চার হয়েছেন সকলে।
তসলিমা নাসরিনের পোস্টেও বডি শেমিং করারই অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। শুধু মহিলাদের নয়, পুরুষদেরও শরীর নিয়ে কটাক্ষ একই রকম অপরাধ। তাই অনেকেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন লেখিকার পোস্টে। ঠিক কী লিখেছেন তিনি?
তসলিমার লেখায়, ‘সুগোল সুডোল ফার্ম স্তন দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। মেয়েরা স্তন দেখানো, ক্লিভেজ দেখানো জামা পরলে বেশ লাগে দেখতে। সুদর্শন পুরুষদের যেমন শর্টস পরলে বা সুঠাম বাইসেপ দেখানো স্লিভলেস টিশার্ট, বুকের লোম দেখানো ডীপ ভি নেক টিশার্ট পরলে দেখতে ভালো লাগে, তেমন মেয়েদের কিছুটা নিতম্ব ঝিলিক দেওয়া সুগঠিত পা দেখানো মিনি শর্টস পরলে, ক্লিভেজ বা অর্ধেক স্তন দেখানো, পেট এবং নাভি দেখানো ছোট টপ পরলে দেখতে বেশ লাগে।
কিন্তু আজকাল কী যে হয়েছে, যার স্তন দেখতে ভালো নয়, স্যাগিং, বা প্রায় ফ্ল্যাট, তারাও, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক জগতের সেলেব্রিটিরা ডীপ ভি নেক ড্রেস পরেন। কেন যে পরেন, কী দেখাতে, বুঝি না। আর বিশাল বপুর কুচ্ছিত পুরুষগুলোও আঁটসাঁট জামা পরে চললেন। চোখ সরাতে পারলে বাঁচি!’
পোস্টের শেষে তসলিমার সংযোজন, ‘সমুদ্রতীরে, বা লেকের পাড়ে রোদ্রস্নান করতে থাকা সুইমিং কস্টিউম পরা ছেলে আর বিকিনি পরা মেয়ে দেখলে চোখের আরাম হয়। কিছুই না পরা ছেলে মেয়ে দেখলে তো মনের আরাম হয়। মানুষ যে প্রকৃতির সন্তান, তা তো নগরীর কোলাহলে অনেকটা ভুলতে বসেছি।’
এই লেখা দেখেই রে রে করে তেড়ে এসেছেন নেটিজেনদের একাংশ। অনেকেরই দাবি, তসলিমা নাসরিনের কাছে এটা আশা করা যায় না। আবার কারোর প্রশ্ন, ‘এই তসলিমা নাসরিনই কি সেই তসলিমা যাঁর থেকে মুক্ত চিন্তা শিখেছিলাম!’ নারীবাদী লেখিকার কাছে এমন মন্তব্য আশা করেননি বলে হতাশাও প্রকাশ করেছেন কয়েকজন।