বাংলাহান্ট ডেস্ক: কর্ণাটক থেকে যে হিজাব বিতর্ক (Hijab Controversy) শুরু হয়েছিল, তা এখন গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। একাধিক তারকা বিষয়টা নিয়ে মতামত রেখেছেন। তালিকায় যোগ হয়েছে বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনের (Taslima Nasrin) নামও। তবে মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়েও বরাবরের মতোই পুরনো ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
হিজাব বিতর্ক নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সুরেই সুর মিলিয়েছেন তসলিমা। তাঁর কথায়, “আমার মতে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকার রয়েছে পড়ুয়াদের জন্য ধর্মনিরপেক্ষ ইউনিফর্মের নিয়ম বহাল করা।” তাঁর মতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম পরতে বলায় কোনো ভুল হয়নি। কারণ স্কুল, কলেজ ধর্মীয় পরিচয়, কুসংষ্কার দেখানোর জায়গা নয়।
তসলিমা বলেন, লিঙ্গসাম্য, ব্যক্তি স্বাধীনতা, মানবতাবোধের শিক্ষা দেওয়া উচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। হিজাব, নিকাব ও বোরখা মহিলাদের ‘ভোগ্য বস্তু’তে পরিণত করে বলে মনে করেন তসলিমা। কারণ পুরুষরা মহিলাদের দেখলেই লালায়িত হতে পড়ে। তাই নিজেদের ঢেকে রাখতে শেখানো হয় মহিলাদের। এটা খুবই লজ্জাজনক, বক্তব্য তসলিমার।
লেখিকার স্পষ্ট বক্তব্য, “বিষয়টা ইসলাম কেন্দ্রিক কিনা সেটা নয়। সতেরো শতকের নিয়ম এই একুশ শতকে তো খাটতে পারে না, আর খাটবেও না। আমাদের এটা বুঝতে হবে যে বোরখা বা হিজাব কখনোই মহিলাদের পছন্দ হতে পারে না। যখন পছন্দ করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয় তখনি ওগুলো পরতে হয়। বেশিরভাগ সময়েই পরিবারের সদস্যরাই মহিলাদের জোর করে হিজাব বা বোরখা পরার জন্য।”
প্রসঙ্গত, উদুপির একটি কলেজ থেকে প্রথমে শুরু হয়েছিল হিজাব বিতর্ক। কলেজে কয়েকজন মুসলিম পড়ুয়াকে বলা হয়, হিজাব খুলে আসতে নয়তো ক্লাসরুম ছেড়ে বেরিয়ে যেতে। পড়ুয়ারা হিজাব খুলতে অস্বীকার করলে তাদের ক্লাস ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। এরপরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। হিজাব নিষিদ্ধ হবে কিনা তা নিয়ে আপাতত কর্ণাটক হাইকোর্টে মামলা চলছে।