বাংলাহান্ট ডেস্ক: বলিউডের দেখাদেখি টলিউডেও শুরু হয়েছে বয়কটের ধুম। পরপর দুটো ছবির পর পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের (Koushik Ganguly) ‘লক্ষ্মী ছেলে’ বাতিলের ডাক দিয়েছিলেন কয়েকজন। কিন্তু ছবির বিষয়বস্তু ভাল হলে কোনো বয়কটের ডাকই আটকে রাখতে পারে না। একথা বারে বারে বলেছেন দর্শক থেকে শুরু করে অভিনেতা অভিনেত্রীরাও। এবার লক্ষ্মী ছেলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)।
কোনো মুসলাম পরিচালক নিজেদের ধর্মীয় উন্মাদনা নিয়ে ছবি তৈরির ক্ষমতা রাখেন তো? খোঁচা দিয়ে প্রশ্ন তসলিমার। সদ্য লক্ষ্মী ছেলে দেখে এসেছেন তসলিমা। আর তারপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটির ফলাও করে প্রশংসা করে বিষ্ফোরক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন।
তসলিমা লিখেছেন, ‘কৌশিক গাঙ্গুলির লক্ষ্মী ছেলে দেখে এলাম। দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল লক্ষ্মী ছেলেটি আমি, আমার সঙ্গে ছেলেটির অদ্ভুত মিল । আমি যেমন সারাজীবন যে কথাটি বলা উচিত সে কথাটি বলেছি, যে কাজটি করা উচিত সে কাজটি করেছি, লক্ষ্মী ছেলেটিও তাই করেছে। যেমন আমি সাত পাঁচ ভাবিনি, কী হবে না হবে ভাবিনি, লক্ষ্মী ছেলেটিও তাই। আমি মিশে যাচ্ছিলাম চরিত্রটির সঙ্গে।’
ছবির বিষয়বস্তু, পরিচালনা প্রতিটি বিষয়ই মুগ্ধ করেছে তসলিমাকে। প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘কৌশিকের নতুন ছবি এলেই প্রশ্ন জাগে, এবারের ছবিও কি তাঁর আগের ছবির মতোই ভালো? আমি বুঝি না একজন পরিচালক পর পর এত ভালো ছবি করেন কী করে? জগতবিখ্যাত বার্গম্যান, কুব্রিক, কুরোসাওয়া, স্করসেস, ফেলিনি, তারকোভস্কি, হিচককেরও সব ছবি ভালো হয়নি। কৌশিকের মনে হচ্ছে সব ছবিই ভালো।’
এরপরেই ছোটখাট বোমা বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছেন তসলিমা। লেখিকার প্রশ্ন, ‘লক্ষ্মী ছেলে দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ইহুদিরা তাঁদের কুসংস্কার, ধর্মীয় উন্মাদনা আর ধর্ম ব্যবসা নিয়ে অনেক কালজয়ী ছবিই তো করলেন, মুসলমানরা কবে তাঁদের ওসব নিয়ে ছবি করবেন?’
তসলিমার পোস্টের উত্তরে একজন লিখেছেন, ‘আপনার কথায় কোথায় ধর্ম প্রসঙ্গ টেনে এনে পাবলিসিটি পাওয়া একটা অভ্যাস করে নিয়েছেন। ক্ষমা করবেন, পরিচিতি ও লেখা এই দুটোতেই তো আপনি কম কিছু নন আপনি একটা সিনেমা বানাতে পারতেন তো।।।বানাননি।।। তাহলে কোন ধর্মের কে কি বানায়নি সেটা কেন বলছেন?’
আবার কেউ লিখেছেন, পৃথিবীতে যত ধর্ম আছে কোনোটাই গোঁড়ামি মুক্ত নয়। শিক্ষিত, চেতনাদীপ্ত মানুষের আরো বেশি করে এসব গোঁড়ামির বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত।