‘বাংলাদেশের মিডিওকার গায়ক’, সারেগামাপা ‘আদিখ্যেতা’ করেছে! ধর্ষণে অভিযুক্ত নোবেলকে কটাক্ষ তসলিমার

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বারংবার বিতর্কিত, অপরাধমূলক কাজের জন্য সংবাদে শিরোনামে উঠে আসেন বাংলাদেশের গায়ক মইনুল আহসান নোবেল। অতি সম্প্রতি এক কলেজ ছাত্রীকে সাত মাস ধরে বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। এ নিয়ে এবার মুখ খুললেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। বাংলাদেশে না থেকেও সেখানকার হাল হকিকত তাঁর নখদর্পণে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজের সুস্পষ্ট মতামত দিতে কখনোই পিছপা হননি তসলিমা (Taslima Nasrin)। নোবেলের এই অধঃপতন দেখেও তীব্র ধিক্কার দিয়ে তাঁকে ‘নারী বিদ্বেষী’ বলে মন্তব্য করেছেন খ্যাতনামা লেখিকা।

নোবেলকে নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তসলিমা (Taslima Nasrin)

মূলত বাংলা রিয়েলিটি শো সারেগামাপার হাত ধরেই নোবেলের উত্থান। যদিও সেই জনপ্রিয়তা এখন অস্তগত। পুরনো প্রসঙ্গ টেনেই তসলিমা (Taslima Nasrin) লিখেছেন, ‘নোবেলকে প্রথম দেখি সারেগামা অনুষ্ঠানে। তাঁকে নিয়ে সারেগামার বিচারক- গায়কদের অতি উচ্ছ্বাস দেখে অবাক হয়েছিলাম। নোবেল কি এত ভাল গায়? আমার ওকে মনে হতো বাংলাদেশের মিডিওকার গায়ক। এই গায়ক নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠিত গায়কদের অতি উচ্ছ্বাস আমার কাছে আদিখ্যেতা বা মেকি বলে মনে হতো। নোবেল জীবনে কম সম্মান পাননি। কিন্তু এই সম্মানের ন্যূনতম মর্যাদা তিনি রাখেননি।’

Taslima Nasrin slammed bangladeshi singer noble

নোবেলকে নারী বিদ্বেষী তকমা লেখিকার: নোবেলকে সরাসরিই নারী বিদ্বেষী বলে কটাক্ষ করেছেন তসলিমা (Taslima Nasrin)। তবে তাঁর মতে, মাদক সেবন নারী নির্যাতনের কারণ নয়। তাঁর কথায়, ‘সব মাদক সেবকই নারী -নির্যাতক নয়, সব নারী নির্যাতকই মাদক সেবক নয়। মাদক সেবনের সঙ্গে নারী নির্যাতনের সম্পর্ক নেই। নারী নির্যাতকরা ঠান্ডা মাথায় বুঝে শুনেই নারী নির্যাতন করে। ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে সাত মাস ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে নোবেল। এর পেছনে কাজ করেছে নারী বিদ্বেষ। নারী বিদ্বেষ মাদকের চেয়েও লক্ষ গুণ ভয়ঙ্কর। নারী বিদ্বেষ সমাজ ধ্বংস করে দিতে পারে। মাদকাসক্তি থেকে মানুষকে মুক্ত করা সহজ, কিন্তু নারী বিদ্বেষ থেকে মুক্ত করা সহজ নয়।’

আরো পড়ুন : শীতলা মন্দিরের জন্য দুবার করে কোটি টাকার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, এদিকে দু বছরেও হাতে আসেনি অর্থ! কমিটির দাবিতে শুরু বিতর্ক

কী লিখেছেন লেখিকা: ক্ষোভ উগরে দিয়ে তসলিমা (Taslima Nasrin) লিখেছেন, সমাজ মাদক সেবনকে খারাপ চোখে দেখলেও নারী বিদ্বেষকে ‘স্বাভাবিক’ মনে করে। তাই এর জন্য কোনো রিহ্যাব নেই। তাঁর কথায়, এখনো অধিকাংশ মানুষ স্ত্রী ধর্ষণকে ধর্ষণ বলে মনেই করেন না। মেয়েদের ঘর বন্দি করা, বোরখাবন্দি করা, নারীর স্বাধীনতাকে খর্ব করা, মানবাধিকার লঙ্ঘন করাকে স্বাভাবিক বলে মনে করা হয় এখনো।

আরো পড়ুন : ‘মা আমি চুরি করিনি’, চোর অপবাদে মার সিভিক ভলান্টিয়ারের, চিঠি লিখে আত্মঘাতী স্কুলছাত্র

তসলিমা স্পষ্ট লিখেছেন, ‘আজও নারী বিদ্বেষকে ক্রাইম হিসেবে সমাজ দেখে না। অসভ্য রাষ্ট্রের আইনও একে ক্রাইম বা অপরাধ হিসেবে দেখে না। নারী- বিদ্বেষ থেকে আসে নারী নির্যাতন, নারী অবদমন, যৌন হেনস্থা, যৌন হয়রানি, যৌন নির্যাতন ইত্যাদি একশো রকম অপরাধ।’ প্রসঙ্গত, এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অপহরণ করে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে নোবেলের (Noble) বিরুদ্ধে। তবে খবর পেয়ে ডেমরা থানার পুলিশ তরুণীকে উদ্ধার করে গ্রেফতার করেছে নোবেলকে।

Niranjana Nag

নীরাজনা নাগ, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করার পর সাংবাদিকতার সফর শুরু। বিগত ৫ বছর ধরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।

X