আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হলে মদ জুয়া বৈধ করতাম, নামাজ পড়া বন্ধ করে দিতাম! বললেন বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিন

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ছোটবেলায় বিভিন্ন খেলার মধ্যে অন্যতম খেলা ছিল ট্রুথ এন্ড ডেয়ার। বা ছোট থেকে বড় হয়ে উঠার মধ্যেও বিভিন্ন খেলায় এরকম জিজ্ঞেস করা হয় যে যদি :প্রধানমন্ত্রী হতে তাহলে কি কি করতে’ এই প্রশ্নের উত্তরে সবাই নিজের পছন্দের যা যা রয়েছে সেগুলি কোথায় উল্লেখ করে থাকে। বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তসলিমা নাসরিনের পরিচয় দিতে হয় না দীর্ঘ ২৫ বছরে তসলিমাকে গোটা বিশ্ব চিনতে পেরেছেন। লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশ সরকার দীর্ঘ পঁচিশ বছরের জন্য নির্বাসন দিয়েছেন। তসলিমা বর্তমানে ভারতের বাসিন্দা। নিজের ফেসবুক পেজ থেকে তসলিমা একটি পোস্ট লিখেছেন। তা তিনি লিখেছেন তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে ঠিক কী কী করতেন।

images 25 2

   

“আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হইলে কী করতাম?
১। সংবিধান থেইকা বিসমিল্লাহ বাদ দিতাম। রাষ্ট্র ধর্ম বাদ দিতাম।
২। নারী পুরুষের সমানাধিকারের ভিত্তিতে অভিন্ন দেওয়ানী বিধি করতাম। কোনও কোরানের আইন, কোনও মনুর আইন, মোদ্দা কথা কোনও ধর্মীয় আইন চলবে না।
৩। মন্দির, মসজিদ, গির্জা মির্জা সবগুলারে মিউজিয়াম বানাইতাম। মাদ্রাসাগুলারে বিজ্ঞান ক্লাব বানাইতাম। ধর্ম পালন বাইরে বন্ধ। নামাজ রোজা পুজা মুজা ঘরের ভিতরে কর।
৪। শিক্ষা, প্রাইমারি থেইকা পিএইচডি, বেবাক ফ্রি সবার জন্য।
৫। স্বাস্থ্যসেবা ফ্রি সবার জন্য।বিজ্ঞান ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবা চলবে। কুসংস্কার এবং অবিজ্ঞান ভিত্তিক কবিরাজি, ঝাড়ফুঁক, আয়ুর্বেদ, হোমিও, আকু, মাকু চলবে না।
৬। পতিতাবৃত্তির ব্যাপারে কী করতাম? যৌন কর্মের জন্য শরীর বেচতে চাওয়া অপরাধ না, শরীর কিনতে চাওয়া অপরাধ। অসহায় মেয়েদের বাইন্ধ্যা থানায় নিয়া যাওয়া হবে না, দালাল আর খদ্দেরদের নিয়ে যাওয়া হবে। ডিমান্ড থাকলেই সাপ্লাই থাকে। ডিমান্ডটা বন্ধ করতাম।
৭। ধনীদের থেইকা হাই ট্যাক্স কাটতাম।
৮। দারিদ্র ঘুচাইতাম। গরিব একটাও থাকবে না দেশে। সবার জন্য অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের ব্যবস্থা হবে।
৯। ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতাম। জামাতি ইসলামি ইত্যাদি নিষিদ্ধ। ওয়াজ নিষিদ্ধ। ইজতেমা নিষিদ্ধ।
১০। প্রেস ফ্রিডম থাকবে ১০০ ভাগ। আমারে যত ইচ্ছা গালাগালি করতে চাও করো। বাধা নাই। বাক স্বাধীনতা ১০০ ভাগ।
১১। আমারে তেলানি চলবে না। আমার পিছে ঘুরাঘুরি কইরা সুবিধা আদায়ের কোনও সুযোগ নাই। দুর্নীতি মূর্নীতি চলবে না।
১২। মদ জুয়া সব বৈধ, হাই ট্যাক্স দিতে হবে। গরু ছাগল ভেড়া শুয়োর, মোষ , হাঁস মুরগি, খরগোস ইত্যাদি খাদ্য হিসাবে চাষ করো, স্টান কইরা স্লটার করো, খাও।
১৩। সমুদ্র নদী পুকুরে আবর্জনা ফালাইতে দিতাম না। দুষণমুক্ত রাখতাম। মাছের চাষ করো, মাছ খাও। নদী সমুদ্র খালি যেন না হয়। শাক সবজি ফলাও, শস্য ফলাও, ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার চলবে না।
১৪। দুইডা সাবমেরিন বেইচা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট উন্নত করতাম। মানুষের বড়লুকি দেখানি বন্ধ করতাম। গাড়ি কেনার হিড়িক কমাইতাম। গাড়ি পার্কিং এ দামি টিকিটের ব্যবস্থা করতাম। বাইসাইকেল লেইন বানাইতাম রাস্তার ধার ঘেইষা। বাইসাইকেল চালাইলে স্বাস্থ ভালা থাকবো, পলুশান কমবো।
১৫। কুত্তা বিলাই রাস্তায় থাকবে না একটাও। সবাইরে পালতে হবে মানুষের। এনিম্যাল রাইটস মানুষের রাইটসের চেয়ে বেশি হবে।
১৬। বোরখা নিষিদ্ধ করতাম। সিকিউরিটি ইস্যুতে।
১৭। বিজ্ঞানের পরীক্ষা নিরিক্ষাতে অঢেল টাকা ঢালতাম।
১৮। খালি গার্মেন্টস না, নানা জাতের ইন্ডাস্ট্রি বানাইতাম।
১৯। আর্মি উঠাইয়া দিতাম। আর্মির দরকার নাই দেশে।
২০। জেলগুলারে করতাম সংশোধনী কেন্দ্র। মৃত্যু দণ্ড নিষিদ্ধ করতাম।”

সম্পর্কিত খবর