বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিতর্কিত মন্তব্য করে ফের একবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলেন বিজেপি (BJP) নেতা তথাগত রায় (Tathagata Roy)। অতীতে একাধিকবার তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন এই সভাপতি আর এবার তাঁর আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। গতকাল মমতা-মোদী বৈঠককে খোঁচা মারেন তিনি। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে টুইট করে বলেন, “প্রমাণ করুন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আপনার কোনো গোপন আঁতাত নেই।” তাঁর এই টুইটের পর চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে নেট মাধ্যমে।
বাংলায় উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি মাঝে বর্তমানে দিল্লি সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগদানের পাশাপাশি একাধিক কর্মসূচি নিয়ে রাজধানীতে গিয়েছেন তিনি। এ সফরে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। একইসঙ্গে আগামীকাল নীতি আয়োগের বৈঠকেও যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এসব ছাপিয়ে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে গোটা দেশবাসীর নজরে ছিল মমতা-মোদী বৈঠক। গতকাল প্রায় ৪৫ মিনিট সময় ধরে দুজনের মধ্যে চলে কথোপকথন। যদিও বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোন খবর মেলেনি।
তবে এদিন সেই বৈঠককে কটাক্ষ করে তথাগত রায় লেখেন, “কলকাতায় গোপন আঁতাত নিয়ে ক্রমশ চর্চা চলছে। অনেকেই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মমতার গোপন আঁতাতের অভিযোগ তুলে চলেছে। সেই বোঝাপড়ার জন্যই তৃণমূল কংগ্রেসের চোর কিংবা খুনিরা বেঁচে যাবে।” এরপর প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি লেখেন, “আপনি প্রমাণ করুণ যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আপনার কোনো গোপন আঁতাত নেই।”
উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ঘিরে একের পর এক জল্পনা সৃষ্টি হয়ে চলেছে। রাজ্যের বিরোধী দলগুলি ক্রমশ মোদী এবং মমতার মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয়টি সামনে তুলে ধরেছে। বাংলায় বর্তমানে চাকরি দুর্নীতি মামলায় ক্রমশ জেরবার হয়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি এবং দুর্নীতি মামলায় অন্যান্য একাধিক নেতা নেত্রীদের নাম উঠে আসার মাধ্যমে অস্বস্তি ক্রমশ বেড়ে চলেছে শাসকদলের। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সাক্ষাৎ আসলে দুর্নীতি মামলাগুলি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা বলেই আক্রমণ করেছে বিরোধীরা।
অবশ্য এ সকল অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল। তাদের দাবি, “যেভাবে রাজ্যের বকেয়া টাকা সহ প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা এবং ১০০ দিনের মতো প্রকল্প গুলিতে কেন্দ্র টাকা পাঠাচ্ছে না, সেই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরার জন্যই দিল্লি গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।” ফলে সব মিলিয়ে দাবি এবং পাল্টা দাবি মাঝে এদিন তথাগত রায়ের বক্তব্য যে বঙ্গ রাজনীতিতে নয়া বিতর্কের সৃষ্টি করলো, তা বলাবাহুল্য।