বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সকলের নজর এখন সুপ্রিম কোর্টের দিকেই। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের একটা রায়ের উপরে নির্ভর করছে, ২৬ হাজার জন চাকরিজীবীর ভবিষ্যৎ। গত বছরের এপ্রিল মাসে ২০১৬ সালের এসএসসি (SSC Recruitment Scam) চাকরি প্রার্থীদের পুরো প্যানেল বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করার পরেই কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ে চাকরিরত ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষকের ভবিষ্যৎ। শেষ পর্যন্ত মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে।
এসএসসিতে (SSC Recruitment Scam) চাকরি হারানোর আশঙ্কাতেই কি অসুস্থ হয়ে মৃত্যু শিক্ষকের?
হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই এক যোগে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার, SSC এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন চাকরি হারাদের একাংশও। ইতিমধ্যেই ওই মামলার (SSC Recruitment Scam) শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে শীর্ষ আদালতে। আগামী ১৫ই জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। কিন্তু এই মামলার শুনানি শোনার আগেই চলে গেলেন এক আন্দোলনরত শিক্ষক।
তিনি হলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপের মহেন্দ্রগঞ্জ হাইস্কুলের ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষক প্রশান্ত ঘোষ। শীর্ষ আদালতে মামলার (SSC Recruitment Scam) পরবর্তী শুনানির হওয়ার আগেই মৃত্যু হল তাঁর। হাইকোর্টের নির্দেশে SSC-র ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে আন্দোলন করছিলেন ওই শিক্ষক। কিন্তু গত ৭ তারিখ এসএসসি চাকরি বাতিল মামলা মুলতবি হয়ে যাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ওই শিক্ষক।
চাকরিতে অনিশ্চয়তা তৈরী হওয়ায় দিনের পর দিন মানসিক চাপ বেড়েই চলেছিল প্রশান্তবাবুর। অসুস্থ শরীর নিয়েও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলেও পুরো প্যানেল বাতিলের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন তিনি। অন্যান্যদের মত তাঁরও দাবি ছিল শুধুমাত্র অযোগ্যদের প্যানেল থেকে বাদ দিতে হবে। কিন্তু দিনের পর দিন সুপ্রিম কোর্টের SSC-র মামলা পিছিয়ে যাওয়া এবং চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় প্রশান্তবাবুর সুগার এবং রক্তচাপ বাড়তে শুরু করেছিল।
আরও পড়ুন: শিক্ষায় বিরাট সাফল্য! এক নম্বরে বাংলা, সব রাজ্যকে ছাপিয়ে দুর্দান্ত রেকর্ড পশ্চিমবঙ্গের
গোটা পরিবার তাঁর মুখের দিকেই তাকিয়েছিল। তাই অসুস্থ অবস্থাতেও গত ২ জানুয়ারি বিকাশ ভবন অভিযানে গিয়েছিলেন প্রশান্ত বাবু। বিকাশ ভবন অভিযান থেকে ফেরার পর তিনি বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর তাকে তমলুকের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা করা হয়। বুধবার দুপুরে মৃত্যু হয় তাঁর।
আন্দোলনরত অন্যান্য শিক্ষকরা জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় প্রশান্ত বাবুর চিন্তা আরও বেড়েছিল। কর্মহীন হয়ে পড়ার আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছিলেন তিনি। শুরু থেকেই প্রশান্ত বাবুর দাবি ছিল, ‘শুধু অযোগ্যদের প্যানেল থেকে বাদ দিতে হবে, যোগ্যদের চাকরি বহাল রাখতে হবে।