বাংলা হান্ট ডেস্ক : অতীতে এমন নজির কম নেই। ফের সেই ধর্মদ্রোহের (Blasphemy) অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হল পাকিস্তান (Pakistan)। গত শনিবার দক্ষিণ বালোচিস্তানের কেচ জেলার তুরবত শহরের কাছে এক শিক্ষকের (Teacher) উপর হামলা করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি ধর্মের অবমাননা করেছেন। মর্মান্তিক এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বেই।
সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, ইসলামের বিরুদ্ধমত পোষণ করার অভিযোগে আব্দুল রউফ নামের এক ইংরেজি শিক্ষককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। গত শনিবার মালিকাবাদ এলাকার একটি কবরস্থানের কাছে আব্দুল রউফ নামক ঐ শিক্ষকের উপর হামলা করা হয়। সেই সময় তিনি উলেমাদের একটি জিরগায় (বৈঠক) যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। সেখানে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের জবাবদিহি করতেই যাচ্ছিলেন ।
তবে সেটা আর সম্ভব হয়নি। কারণ তার আগেই নৃশংসভাবে খুন করা হয় তাকে। সূত্রের খবর, আবদুল রউফ নামের ওই শিক্ষক তুরবাত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইমার হিসেবে একটি ভাষাকেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বছর ২২ এর ঐ যুবক। সেখানে ইংরেজি শেখাতেন। পাকিস্তানি মিডিয়া মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী, তিনি একদিন সেখানকার পড়ুয়াদের পৃথিবীর গ্র্যাভিটি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। আর সেটাই হয়ে যায় কাল।
আরও পড়ুন : ঝাঁ চকচকে স্টেশন হলে বাড়বে ভাড়া! ট্রেনের টিকিটের দাম নিয়ে জল্পনার মাঝেই মুখ খুললেন অশ্বিনী বৈষ্ণব
বিভিন্ন মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, মহাকর্ষ তত্বের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাকিস্তানি পড়ুয়াদের কাছে ইসলামের অবমাননা বলে মনে হয়। এই কারণে ভাষাকেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা স্থানীয় উলেমাদের কাছে আবদুল রউফের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি করার অভিযোগ আনে। উলেমারা জানান, তারা বিষয়টির সমাধান করবেন। এবং আব্দুল রউফকে তার বক্তব্যকে বোঝানোর জন্য একটি মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে যোগ দিতে বলেন।
আরও পড়ুন : হেঁশেলে আগুন! ফের বাড়ছে চিকেন-ইলিশের দাম, নতুন দর জেনে হতাশ হবেন আপনিও
এই প্রসঙ্গে ভাষাশিক্ষা কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল সুধীর আহমেদ বলেন, ‘শুক্রবার একদল উলেমা ভাষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষার্থী ও মিঃ রউফের কথা শোনেন। মিঃ রউফ অভিযোগ অস্বীকার করে জোর দিয়ে বলেন যে তিনি ব্লাসফেমি করেননি। এবং কোন আপত্তিকর শব্দের ব্যবহার করে থাকলে সেটার জন্য ক্ষমাও চেয়ে নেন।’
আরও পড়ুন : উড়ে গেল ভালোবাসার ভূত, পাকিস্তানে গিয়ে ঘোর বিপাকে অঞ্জু! এবার ফিরতে চাইছে ভারতে
এদিকে উলেমা মুফতি শাহ মীর বলেন, ‘আমি আবদুল রউফকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। সেখানে শহরের শতাধিক উলেমা বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু মাদ্রাসায় পৌঁছানোর আগেই দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।’ যদিও নিহত শিক্ষকের পরিবার থানায় কোন মামলা দায়ের করেনি। তবে পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ বালুচ বলেছেন, ইনভেস্টিগেশনের জন্য একটি বিশেষ টিম গঠন করেছে তারা।