বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সম্প্রতি আবার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এক নজিরবিহীন রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। এক ধাক্কায় চাকরি হারিয়েছিলেন প্রায় ২৬,০০০ প্রার্থী। সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়ায় আপাতত কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন তাঁরা। তবে এবার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি (Recruitment Scam) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে।
ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে এই রাজ্যের একাধিক হেভিওয়েটের। শাসক দলের একাধিক নেতার নামও রয়েছে তালিকায়। এবার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষাধিক টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল মালদার (Malda) গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে। তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছেন সুকুমার বালো নামের এক ব্যক্তি।
গাজোল ব্লকের শংকরপুর নিবাসী সুকুমারের অভিযোগ, ২০১৬ স্লে তাঁর স্ত্রীকে প্রাথমিকে চাকরি (Primary Teacher Job) করে দেওয়ার নাম করে তাঁর থেকে ১২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন মোজাম্মেল। কয়েক মাস পরে তাঁকে একটি নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়। সেই নিয়োগপত্র নিয়ে স্থানীয় একটি সরকারি বিদ্যালয়ে যোগ দেন সুকুমারের স্ত্রী। তবে চাকরিতে যোগ দেওয়ার সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় সরকারি বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে। সেখানেই তাঁকে জানানো হয়, নিয়োগপত্রটি ভুয়ো।
আরও পড়ুনঃ এবার জেলে যাবেন অভিষেক? কী করেছেন তৃণমূল প্রার্থী? দাবি ঘিরে শোরগোল
সুকুমার বলেন, নিয়োগপত্র জাল একথা জানার পরেই মোজাম্মেলের কাছে টাকা ফেরত চান তিনি। বহুদিন ঘোরানোর পর একটি চেক দেওয়া হয় তাঁকে। তবে মোজাম্মেলের দেওয়া সেই চেক ব্যাঙ্কে জমা দিলে তা বাউন্স করে। এই বিষয়ে মোজাম্মেলকে অবগত করা হলেও তিনি টাকা ফেরানোর কোনও উদ্যোগ নেননি বলে দাবি সুকুমারের। শেষমেশ মালদা জেলা আদালতের দ্বারস্থ হলে তাঁরা সুকুমারদের পক্ষে রায় দেয়।
মালদা জেলা ও দায়রা আদালতের তরফ থেকে মোজাম্মেলকে টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও আজ অবধি সেই টাকা ফেরত দেননি বলে দাবি সুকুমারের। এমনকি টাকা চাওয়া হলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এদিকে যার বিরুদ্ধে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ সেই মোজাম্মেল এই বিষয়ে বলেন, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি। এখানেই শেষ নয়, সুকুমার বালো বলে কাউকে চেনেন না বলেও দাবি করেন তিনি। গোটা বিষয়টিকে বিরোধীদের চক্রান্ত বলে মন্তব্য করেন মোজাম্মেল। এমনকি অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও বলেন।
গাজোলের বিজেপি বিধায়ক চিন্ময়ী দেব বর্মণ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘রাজ্যের দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধিরা নানান রকম আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন। শাসকদলের কয়েকজন নেতা-মন্ত্রীর জন্য আজ প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এই বিষয়গুলি বেদনাদায়ক। আশা করব, পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে’।