বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মাত্র ৩ সপ্তাহ হল স্কুল খুলেছে। করোনা আবহ কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক হছে পড়ুয়াদের পঠন পাঠনও। কিন্তু স্কুল খুললেও, ছাত্র ছাত্রী কোথায়? এতদিন হয়ে গেল দেখে নিজেরাই পড়ুয়াদের খুঁজে বের করার অভিযানে নেমে পড়লেন হুগলির জাঙ্গিপাড়া ব্লকের নিলারপুর রাজা রামমোহন বিদ্যাপীঠের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
পড়ুয়াদের খুঁজতে গিয়ে তাঁদের চক্ষু চড়কগাছ। কেউ সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা, আবার কারো সন্তানের বয়স ১ মাস, আবার কেউ বা কাজ করছে গ্যারাজে, কেউ বা গহনার দোকানে। এই ছাত্র ছাত্রীদের বয়স খুব বেশি হলে ১৩ থেকে ১৫-র মধ্যেই হবে।
করোনা আবহে লকডাউনে আমূল বদলে গিয়েছে তাঁদের জীবন। মিরপুর গ্রামের এক ছাত্রীর মা জানান, ‘মেয়ে যাকে ভালোবাসত, তাঁকেই বিয়ে করে নিয়েছে। এখন ওর মেয়ের বয়স এক মাস, আর ওর বয়স ১৪ বছর’। তবে স্কুলে একথা জানানো হয়েছে কিনা সে প্রশ্ন করতেই নির্বাক ছাত্রীর মা।
হরিহরপাড়ার ক্লাস নাইনের এবং দশম শ্রেণির দুই ছাত্র কাজে লেগে পড়েছেন। কেউ কাজ করছে গ্যারেজে, আবার গহনার দোকানে। শিক্ষকদের কথা শুনে, ছেলেদের আবারও স্কুলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তাঁদের বাবা মায়েরা। আবার কাশীপুরের এক ছাত্রীর বাবার মাথার সমস্যা থাকায়, তাঁর জেঠু-জেঠিমা ভালো পাত্রের সন্ধান পেয়ে ক্লাস নাইনের ছাত্রীকে বিয়ে দিয়ে দেন। আর সে এখন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
স্কুল খোলার পর শিক্ষকরা দেখেন, দশম-দ্বাদশের তিনশোরও বেশি ছাত্রছাত্রী থাকলেও, বর্তমানে উপস্থিতির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬। আবার নবম-একাদশে ২৩৪ জনের মধ্যে বর্তমান সময়ে স্কুলে আসছে ৫৪ জন ছাত্রছাত্রী। প্রথমটায় মাইকে প্রচার করেও লাভ না হওয়ায়, তাঁরা নিজেরাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেন। আর এই দশা দেখে তাঁদের নিজেদেরই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়।