বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: আবারও একটা সিরিজ জয়। বুমরা, রোহিত, পন্থ, হার্দিকদের অনুপস্থিটিতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সিরিজ জিতলো শিখর ধাওয়ানের ভারত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের গড়া রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে শুরুতে ক্যারিবিয়ান পেসারদের সামনে কিছুটা বেকায়দায় পড়লেও শ্রেয়স আইয়ার, সঞ্জু স্যামসন এবং অক্ষর প্যাটেলের অর্ধশতরানের দৌলতে ২ বল বাকি থাকতেই জয় পেল ভারত। ভারতের জার্সিতে প্রথমবার জ্বলে উঠলেন সঞ্জু স্যামসন। শ্রেয়স আইয়ারের ধারাবাহিকতাও চোখে পড়ার মতো। শেষ ৮ ম্যাচে ৭ বার অর্ধশতরানের গন্ডি পার করলেন তিনি। ব্যাটে বলে দুরন্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করলেন অক্ষর প্যাটেল।
রবিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে তারপরই একটি অনন্য রেকর্ড করে ফেলল ভারতীয় দল। কোন একটি নির্দিষ্ট ক্রিকেট খেলিয়ে দেশের বিরুদ্ধে টানা সর্বাধিক দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ জয়ের রেকর্ড করলো ভারত। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল পাকিস্তানের নামে। ১৯৯৬ থেকে ২০২১ অবধি জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে টানা ১১ টি সিরিজ জিতে ছিল তারা। ২০০৭ থেকে ২০২২ অবধি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১২ টি সিরিজ জিতে এই রেকর্ড ভেঙে দিলো ভারতীয় দল।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কাইল মেয়ার্স ব্যাট হাতে তান্ডব শুরু করেছিলেন। সিরাজ বাদে বাকি পেসারদের আক্রমণ করে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। তখন সাই হোপ অপর দিকটা ধরে রাখার কাজ করেছিলেন। বাধ্য হয়ে বোলিং পরিবর্তন করে আচমকা দীপক হুডাকে আক্রমণে আনেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট হিসাবে মেয়ার্সের উইকেটও তুলে নেন তিনি। এরপর অক্ষর প্যাটেল এবং যুজবেন্দ্র চাহালও একটি করে উইকেট তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানের গতিতে বাঁধন দেন। যতক্ষণ দুই অফস্পিনার অক্ষর প্যাটেল এবং দীপক হুডা বল করেছিলেন ততক্ষণ রানের গতিতে বাঁধন ছিল। তাদের সামলে নিয়ে নিকোলাস পুরান এবং সাই হোপ বাকি বোলারদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করেন। দুর্দান্ত অর্ধশতরান করেন অধিনায়ক পুরান (৭৫)। এরপর শার্দূল ঠাকুর নিজের দ্বিতীয় স্পেলে এসে তিনটি উইকেট তুলে না নিতেন। পুরান ও সাই হোপ দুজনকেই প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। ভারতীয় পেসারদের মধ্যে সিরাজ দুই স্পেলেই ভালো বোলিং করে একটি মেডেন সহ মাত্র ৪৬ রান দেন কিন্তু কোনও উইকেট পাননি।
রান তাড়া করতে নেমে গিল নিজের ফর্ম বজায় রাখলেও ধাওয়ানকে নড়তে দেননি ক্যারিবিয়ান পেসাররা। প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৪২ রান তুলতে পারে ভারত। এরপর ধাওয়ান ৩১ বলে মাত্র ১৩ রান করে আউট হন। কিছুক্ষণ পরে ভালো খেলতে থাকা শুভমান গিলকে (৪৩) ফেরান কাইল মেয়ার্স। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সূর্যকুমার যাদবের অফফর্ম অব্যাহত। কিন্তু এরপর ভারতের হাল ধরেন শ্রেয়স আইয়ার ও সঞ্জু স্যামসন। ৯৪ বলে ৯৯ রানের পার্টনারশিপ গড়েন তারা। এরপর সিরিজে নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতরান করা শ্রেয়স ৭১ বলে ৬৩ রান করে আলঝারি জোসেফের শিকার হন। এরপর আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকা সঞ্জু ৫১ বলে ৫৪ রান করে দুর্ভাগ্যবশত রান আউট হন। এটি ছিল ভারতের জার্সিতে তার প্রথম অর্ধশতরান। দীপক হুডা সেট হয়েও ৩৩ রানের বেশি করতে পারেননি। কিন্তু তারপর ভারতের ত্রাতা হয়ে দেখা দেন অক্ষর প্যাটেল। অপরদিক থেকে উইকেট পড়তে থাকলেও টেলএন্ডারদের নিয়ে ৩৫ বলে ৬৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে ভারতকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন তিনি। তার ইনিংস সাজানো ছিল ৫টি ছক্কা ও ৩টি চার দিয়ে। বল হাতে একটি উইকেট সহ ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কৃপণ বোলিং এবং ব্যাট হাতে দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলার পুরস্কার স্বরূপ ম্যাচের সেরা তিনিই।