বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ এই মুহূর্তে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া (India vs Australia) একে অপরের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ খেলছে। বিশ্বকাপের আগে দুই দলের কাছে এটা একটু কিন্তু বড় সুযোগ নিজেদের প্রস্তুতি সেরে নেওয়ার জন্য। কিছুটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা, কিছুটা চাপমুক্তভাবে ক্রিকেট খেলা ইত্যাদি বিষয়গুলি বিশ্বকাপের আগে শেষবার করার সুযোগ পাচ্ছে দুই দলই।
মোহালিতে প্রথম ওডিআই ম্যাচে রোহিত শর্মার অনুপস্থিতিতে নেতৃত্বের দায়িত্ব পাওয়া লোকের রাহুল টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। কারণ ভারতের দুই ফাস্ট বোলার মহম্মদ শামি ও শার্দূল ঠাকুর বোলিং করার মাঝেই অসুস্থ বোধ করেন এবং মাঠ ছেড়ে কিছুক্ষণের জন্য ড্রেসিংরুমে ফিরতে বাধ্য হন। তার আগে অবশ্য স্বামী নতুন বল হাতে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ দিয়ে দিয়েছিলেন প্রথম ওভারেই। তার বলেই খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে মাত্র ৪ রানে ড্রেসিং রুমে ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন মিচেল মার্শ। এরপর স্টিভ স্মিথকেও ৪১ রানের ব্যক্তিগত করে বোল্ড করেন তিনি। সিরাজ এবং বুমরার পাশাপাশি তার ওপর যে চাইলেই ভরসা রাখা যায় সেটা তিনি আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন।
কিন্তু ভারতের যে জায়গাটা নিয়ে সমস্যা থেকে গেল সেটা হচ্ছে ফিল্ডিং। ভারতের দুই তারকা ফাস্ট বোলার শামি এবং যশপ্রীত বুমরার প্রথম স্পেল শেষ হওয়ার পর বোলিং করতে আসেন শার্দূল ঠাকুর। সকলেই জানেন যে তিনি বাকি দুজনের মতো কৃপণ বোলার নন। তিনি রান বিলিয়ে যাবেন কিন্তু উইকেট তুলে নেবেন এই ক্ষমতার জন্যই তাকে দলে রাখা হয়েছে।
প্রথম ওভারেই তার দুটি ডেলিভারিকে বাউন্ডারিতে পাঠান ওয়ার্নার। কিন্তু সেই ওভারের শেষ বলেই একটা সুযোগ তৈরি করেছিলেন শার্দূল। কিন্তু মিড অফে দাঁড়িয়ে তার ক্যাচ হাতে পেয়েও সেটি ধরতে ব্যর্থ হন শ্রেয়স আইয়ার। সেই ওয়ার্নারই এরপর ৫২ বলে ৫২ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে ড্রেসিংরুমে ফেরেন। এই ভোল্টি ছাড়াও শ্রেয়শাই আর একাধিকবার মাঠে ঠিকঠাকভাবে বল ধরতে পারেননি। এরপর সূর্যকুমার যাদব দুর্দান্ত ডাইফে একটি ড্রাইভ আটকালেও সেটিকে ঠিকঠাক ভাবে ধরতে পারেননি তিনি। কিন্তু এরপর বল কুড়িয়ে নিয়ে যখন তিনি উইকেট রক্ষকের দিকে থ্রো করে দেন তখন অনেক দূরে রয়েছেন স্ট্রাইকে থাকা মার্নাশ লাবুশানে। কিন্তু এই ম্যাচে বারবার যে ঘটনা দেখা গেছে সেই রীতি মেনেই লোকেশ রাহুল সেই বলটি ধরতে ব্যর্থ হন এবং বড়সড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পায় অস্ট্রেলিয়া। আজকের ম্যাচে একাধিকবার উইকেটের পেছনেও বল গলিয়েছেন রাহুল। এই বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করতে হবে রাহুল দ্রাবিড়কে বিশ্বকাপের আগে। প্রতি ম্যাচে এরকম একটি করে ভুল ভারতকে বিশ্বকাপে অত্যন্ত বড় ভোগান্তির মুখে ফেলতে পারে।
কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা বলার জায়গা এখন যে বিষয়টা নিয়ে তৈরি হয়েছে তাহলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ভারতীয় অডিআই দলের প্রত্যাবর্তন। গত ছয় বছরে এই নিয়ে মাত্র নিজের দ্বিতীয় ওডিআই ম্যাচ খেলতে আজ মাঠে নেমেছিলেন তিনি। তাকে অস্ট্রেলিয়া দলের দুই দক্ষ স্পিনের বিরুদ্ধে ব্যাটিং করার ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাটার স্মিথ এবং ওয়ার্নারের সামনাসামনি ফেলা হয়। কিন্তু দুজনেই অতি সহজে তার বিরুদ্ধে ব্যাটিং করেন এবং বেশ কয়েকবার তাকে গ্যালারিতেও পাঠান। কেন গত ছয় বছর ধরে তাকে ওডিআই ফরমেটে জায়গা দেওয়া হয় নিশ্চয়ই বিষয়টা অস্পষ্ট হয়ে যায়। বিশ্বকাপের আগে অনেকে আশা করেছিলেন যে হয়তো এই সিরিজে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ দেবেন অশ্বিন। কিন্তু মোহালিতে দুপুরে পিছ থেকে সহায়তা পাওয়া সত্ত্বেও যেভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যাটিং করেন দুই অস্ট্রেলিয়ান তারকা, তারপরে আর তার বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়াটা অসম্ভব বলেই মনে করছেন অনেকে। নিজের প্রথম ৬ ওভারে ৩৬ রান দিয়েছেন তিনি। এরপর জাদেজা এসে ওই পার্টনারশিপ ভাঙ্গেন। অশ্বিন যদি নিজের দ্বিতীয় স্পেলে ভালো বোলিং করেন তাহলেও তাতে যায় আসে না কারণ শ্রেষ্ঠ ব্যাটেদের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন নিষ্প্রভ।