চাকরি দেওয়ার নামে নিজের ভাগ্নের ১২ লাখ আত্মসাৎ, তৃণমূল MLA-র ফাঁদে দলীয় নেতার জামাইও

বাংলাহান্ট ডেস্ক : চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা জালিয়াতির অভিযোগে বিদ্ধ তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিধায়কের আপ্ত সহায়ককেও। এবার সামনে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রতারিতদের তালিকায় উঠে এল খোদ বিধায়কের এক ভাগ্নের নাম! শুধু তাইই নয়, চাকরির আশায় টাকা দিয়ে সেই টাকা খুইয়েছেন কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি কল্লোল খাঁর জামাইও। বিধায়কের আপ্ত সহায়ককে গ্রেপ্তারের পর জেরাতেই উঠে এসেছেন এহেন একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

নিজেকে বিধায়ক তাপস সাহার ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে খোদ মামার বিরুদ্ধেই প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন নদিয়ার দইয়েরবাজারের বাসিন্দা শুভ সাহা। মামার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠিতে তিনি বলেন, ‘আমার মা ঝর্ণা সাহা সম্পর্কে তাপসের খুড়তুতো বোন। ২০১৬ সালে তাপস সাহা পলাশিপাড়ার বিধায়ক থাকাকালীন চাকরি দেওয়ার নাম করে আমার কাছ থেকে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। সাত বছর পেরিয়ে গেলেও চাকরি অথবা টাকা কোনওটাই পাইনি। এখন আমার নিদারুণ দারিদ্রে দিন কাটছে। বাবা এবং মা অসুস্থ। চিকিৎসাও করাতে পারছি না। আমাকে এবং আমার পরিবারকে বাঁচান।’

শুধু বিধায়কের ভাগ্নেই নয়, ওই তৃণমূল নেতা এবং তাঁর আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে ঘোরতর অভিযোগ এনেছেন কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কল্লোল খাঁর জামাই সৌম্য নন্দীও। পারিবারিক সূত্রে পরিচিতির কারণে নাকাশিপাড়ার বিধায়ক তথা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁর সঙ্গে একাধিকবার কলকাতার বিধায়ক হোস্টেলে যান সৌম্য। সেখানেই তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয় তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘এমএলএ হস্টেলে আমার আসা যাওয়া ছিল। সেখানেই তাপসের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। এক দিন গল্প করতে করতে একটা চাকরির ব্যাপারে ওঁকে সাহায্যের জন্য বলি। তখন উনি প্রবীর কয়াল নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তাঁর হাতে আমি প্রাথমিকে চাকরির পরীক্ষার অ্যাডমিট এবং অন্যান্য নথিপত্র তুলে দিই। এর পর এক দিন ওঁর আপ্ত সহায়ক চাকরির জন্য পাঁচ লাখ টাকা করে দাবি করে বসেন। আমার সেই টাকা ছিল না। তখন উনি বলেন, না পারলে কিস্তিতে দিও। সেই মোতাবেক প্রথম কিস্তির ৫০ হাজার টাকা ওঁকে দিই সাধন নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে। তার পর বার বার যোগাযোগ করা হলেও চাকরির ব্যাপারে কোনও সুরাহা হয়নি। টাকাও ফেরত পাইনি।’

ঘটনার জেরে প্রবল চাঞ্চল্য ছড়ালেও সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত বিধায়ক। অভিযোগ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোট ১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন ওই বিধায়ক। এই ব্যাপারে বিশদে কথা বলতে অস্বীকার করলেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে বিধায়ক পদ ছেড়ে দেবেন বলেও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তিনি।

Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর