প্রশিক্ষণ নিয়ে হিজবুলের জঙ্গি মাদ্রাসা শিক্ষকের ছেলে! ছিল বড়সড় নাশকতার ছক, অবশেষে গ্রেফতার

বাংলা হান্ট ডেস্ক: লখনউ ATS (Anti-Terror Squad)-এর হাতে ধরা পড়া জইশ-ই-মহম্মদ সন্ত্রাসবাদী হাবিবুল ইসলাম ওরফে সাইফুল্লাহ (১৯) সম্পর্কে এবার বিস্তারিত তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, হাবিবুলের বাবা হলেন একজন শিক্ষক। তিনি বিহারের বাসিন্দা। তবে সাইফুল্লাহ ফতেহপুরে জন্মগ্রহণ করে। তাঁর বাবা প্রায় আড়াই দশক আগে বিহার থেকে পরিবার নিয়ে ফতেপুরে এসেছিলেন। সেখানে তিনি মুসলিম ইন্টার কলেজের পেছনের অংশে নির্মিত মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন বলে জানা গিয়েছে।

সাইফুল্লাহর বাবার নাম হল জাফরুল ইসলাম। সাইফুল্লাহ জানায়, প্রায় ২৫ বছর আগে সে ফতেপুরে এসেছিলেন। মূলত, বিহারের মতিহারী শহরের রামগড়োয়া গ্রামের আধকাপরিয়ার বাসিন্দা ছিল তাঁরা। এমতাবস্থায়, সাইফুল্লাহ এটাওয়া শহরের একটি মাদ্রাসা থেকে ২০১৮ সালে পড়াশোনা শেষ করে।

এর পরে সে ২০১৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত আলিমের পড়াশোনা শেষ করতে গুজরাটের ভারুচ জেলায় যান। জানা গিয়েছে, রমজানের আগে সে ফতেপুরে এসেছিলেন। পাশাপাশি, সাইফুল্লাহ খুব কমই বাড়িতে থাকত। জাফরুল জানান, ছেলেকে তিনি অনেকবার বলেছিলেন লেখাপড়া শেষ করার জন্য গুজরাটে যেতে। কিন্তু সে যায়নি। এই প্রসঙ্গে তিনি ক্ষুব্ধ হন বলেও জানা গিয়েছে।

এদিকে, রবিবার সকাল সাতটার দিকে লখনউ থেকে একজন ইন্সপেক্টর ফোন করেন। ফোনে তিনি জানান, তাঁর ছেলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়া ছেলের আর কোনো খবর পাননি বলে জানান জাফরুল। এই প্রসঙ্গে সিও সিটি দীনেশ চন্দ্র মিশ্র বলেছেন যে, ATS থেকে যে কোনো প্রকার তথ্য পেলেই সেই ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাবিবুল ভার্চুয়াল আইডি তৈরিতে পারদর্শী: জানা গিয়েছে হাবিবুল ওরফে সাইফুল্লাহ ভার্চুয়াল আইডি তৈরিতে অত্যন্ত পারদর্শী। পাশাপাশি, সে জইশের সক্রিয় সন্ত্রাসবাদীদের সাথে যুক্ত ছিল। শুধু তাই নয়, তিনি প্রায় ৫০ জন সন্ত্রাসবাদীর ভুয়ো ভার্চুয়াল আইডিও তৈরি করেছিল। এছাড়াও, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হ্যান্ডলারদের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। জানা গিয়েছে, নাদিম ও হাবিবুল উত্তরপ্রদেশে বসবাসকারী তাঁদের অনেক বন্ধুর নাম ATS-কে জানিয়েছে। এমতাবস্থায়, খুব দ্রুত আরও সন্ত্রাসবাদী গ্রেফতার হতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।

WhatsApp Image 2022 08 14 at 8.03.49 PM

সোশ্যাল মিডিয়ায় জেহাদী ভিডিও বানিয়ে পাঠানো হত: জানা গিয়েছে, টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, মেসেঞ্জারের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হ্যান্ডলারদের সঙ্গে হাবিবুলের যোগাযোগ ছিল। সে  সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপগুলিতে বিভিন্ন জেহাদী ভিডিও পাঠাত এবং অন্যদেরকে অনুপ্রাণিত করত। তাঁর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও একটি ছুরি উদ্ধার করেছে ATS।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর