বেকারত্বের জ্বালায় ভুগছে টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১২০০ প্রার্থী! মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করেও মেলেনি সাড়া

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০১৫ সালে রাজ্যের শেষবারের মতো হয়েছিল টেট (TET) পরীক্ষা। আর এই টেট ঘিরে একাধিক বিতর্ক থাকার পর ফলপ্রকাশ করা হয় ২০১৬ সালে। এরপর আর রাজ্যে টেট পরীক্ষা হয়নি, আর টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের দেওয়াও হয়নি চাকরি। এরপর ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে আবারও টেট পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।

মধ্য শিক্ষা পর্ষদের ওই বিজ্ঞপ্তির পর রাজ্যের লক্ষাধিক যুবক যুবতী পরীক্ষা দেওয়া জন্য আবেদন জানায়। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষক পদে ঠিক কত শুন্য পদ রয়েছে সেই তথ্যই যোগাড় করতে পারেনি পর্ষদ। এর ফলে ২০১৭ সালে আর নেওয়া হয়নি টেট পরীক্ষা।

করোনার ঠিক আগে ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্য সরকারের সুত্র থেকে খবর পাওয়া গেছিল যে, রাজ্যে পুরোভোট শেষ হলেই শিক্ষক নিয়োগ করবে সরকার। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ তো দূরের কথা পুরোভোটই হয়নি। আর তাঁর প্রধান কারণ হল করোনা। যদিও বিরোধী দল গুলো জানিয়েছিল, নিয়োগের নামে ভাওতা হচ্ছে। পুরোভোটে ভোট টানার জন্য সরকার শিক্ষিত যুবকদের সাথে প্রতারণা করছে।

এখন সবথেকে বড় সমস্যা হল, যারা ২০১৫ সালে টেট পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল তাদের কি হবে? ২০১৭ সালের সংবাদমাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, “যে সমস্ত প্রাইমারি টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থী, শুধুমাত্র ট্রেনিং না থাকার কারণে, সেই মুহূর্তে তাঁদের নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি, এমন প্রার্থীরা যদি পরবর্তীতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন, তাঁদেরকে পরবর্তীতে নিয়োগ করার কথা ভাবা হবে।

সেই মতো শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, হাজার হাজার টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়েই নিজেদের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করে। কিন্তু এখনো এই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত টেট পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।

একেতেই করোনা, তারপর গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে বেকারত্বের জ্বালা। পরীক্ষার্থীরা সরকারের থেকে কোন সদুত্তর না পেয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছে। যুব সমাজ, বাংলা তথা ভারতের শক্তি। আজ বেকারত্বের যন্ত্রণা অনুভব করছে প্রতিনিয়ত! .

প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করা পরীক্ষার্থীরা এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ফেসবুক পেজে গিয়ে তাদের সমস্যার কথা জানায়। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। সরকারের তরফ থেকে তাদের কোনরকম খোঁজ খবর রাখা হয়নি। না তাদের চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ১২০০ পরীক্ষার্থী চাইছে সরকার এই লকডাউনের মধ্যেও যেন তাদের দিকে একটু চোখ তুলে তাকাক। তাঁরা চাইছে সরকার ঘরে বসে নিয়োগ করুক। অন্তত এই কাজটা করলে তাঁরা মানসিক দিক থেকে শান্তি পাবে। এখন এটা দেখতে হবে যে, সরকার কবে তাদের দিকে মুখ তুলে তাকায়।


Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর