বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাঁকুড়া (Bankura) একটি রুক্ষ এলাকা। বাঁকুড়া জেলার গঙ্গাজলঘাটির অন্তর্গত বনাসুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বিশিন্দা পাহাড়ে এক সাধু এসেছিলেন ১৪ বছর আগে। সেই সময় পাহাড়ের মাথা ছিল একেবারে ন্যাড়া। কিন্তু ১৪ বছর ধরে এই সাধু তিলে তিলে রুক্ষ পাহাড়ের গায়ে তৈরি করেছেন সবুজ গালিচা।
এলাকার মানুষের কাছে তিনি পরিচিত ‘গাছ বাবা’ নামে। সন্ত বাংলা প্রসাদ নামের এই সাধু বিশিন্দা পাহাড়ে আসেন ২০০৯ সালে। সেই সময় এই পাহাড়টি ছিল অন্য ছোট ছোট টিলার মতো একটি রুক্ষ পাহাড়। এরপর সন্ত বাংলা এই পাহাড়ে সৃষ্টি করেন সবুজের। নিজের চেষ্টা ও কিছু স্থানীয়দের সহযোগিতায় আজ এই পাহাড় সবুজ গাছে পরিপূর্ন।
বহু মানুষ দূর দূরান্ত থেকে এই পাহাড় দেখতে আসেন। সন্ত বাংলা বলেছেন কোন রকমে নিজের জন্য একটু খাবার জোগাড় করে বাকি সময় এই পাহাড় সবুজায়নের কাজ করেন তিনি। সন্ত বাংলার আসল নাম লক্ষীকান্ত লায়েক। তিনি আদতে বিশিন্দা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু বহু বছর আগে ধর্ম কর্মে মন হওয়ায় তিনি চলে যান উত্তর প্রদেশ।
সেখানে গিয়ে তিনি ধনঞ্জয় সাউয়ের কাছে দীক্ষা নেন। এরপর তার নাম হয় সন্ত বাংলা প্রসাদ। এরপর ২০০৯ সালে ফিরে আসেন নিজের গ্রামে। এরপর শুরু করেন এই পাহাড়কে সবুজ করার কর্মযোগ্য। তবে এর মধ্যে অন্য অসুবিধাও রয়েছে। অনেক দুর্বৃত্ত গাছ কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে। এই পাহাড়ে প্রতিবছর কাটা পড়ে দুই থেকে তিন হাজার গাছ।
কিন্তু এতে দমে যাবেন না গাছ বাবা। তিনি জানিয়েছেন বর্ষাকালে আরো গাছ লাগাবেন তিনি।লক্ষীকান্ত এই ব্যাপারে বলেছেন, “গাছ লাগানো আমার নেশা। ভালোবাসাও বলতে পারেন। ২০০৯ সালে এসে দেখি পাহাড়টি পুরো ন্যারা। আমি অনেক কষ্ট করে এটাকে সবুজ করেছি। বহু মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন এখন। আমার সঙ্গে তারা কথা বললে আমার একাকীত্ব দূর হয়।”