বাংলাহান্ট ডেস্ক : কারাগারের অন্ধকার কুঠুরিতে কেটে গেছে ৩৩ টা বছর। অবশেষে মুক্তি পেয়ে গেল রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় দোষী নলিনী শ্রীহরণ-সহ ৬ অভিযুক্ত। শুক্রবার তাঁদের সাজা মকুব করার সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। রাজীব হত্যার (Rajiv Gandhi Murder Case) সপ্তম অভিযুক্ত পেরারিভেলানকে চলতি বছরের মে মাসেই জামিনে মুক্তি দেয় শীর্ষ আদালত।
১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুরে কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারে যান রাজীব গান্ধী। সেখানেই আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গি সংগঠন লিবারেশন টাইগারস অফ তামিল ইলম (এলটিটিই)। এলটিটিই-র (LTTE) সদস্য ধানু নামে এক মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গি নিজেকে বোমার সঙ্গে বেঁধে উড়িয়ে দেয়। তাতেই মৃত্যু হয় ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। এই ঘটনায় মোট সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। অভিযুক্ত ছিল মুরুগান, সান্থান, পেরারিভালান, জয়াকুমার, রবিচন্দ্রন, রবার্ট পায়াস ও নলিনী। প্রথমে এদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও পরে সাজা কমিয়ে যাবজ্জবীন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মূলত সোনিয়া গান্ধীর হস্তক্ষেপেই সাজা কমে যায় তাদের।
সেই তখন থেকেই জেলে ছিল অভিযুক্তরা। যদিও এর মাঝে তামিলনাড়ুর একাধিক সরকার এই দোষীদের মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ করে। আসলে রাজীব হত্যা মামলার (Rajiv Gandhi Assassination) সঙ্গে যুক্ত ছিল তামিল আবেগ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর হত্যাকারীদের জঙ্গি বলে মনে করে না তামিলভুমের একটা বড় অংশ। সেকারণেই তামিলনাড়ুর সরকার বারবার দোষীদের মুক্তির সুপারিশ করেছে। শেষবার ২০১৮ সালে তামিলনাড়ুর এআইএডিএমকে (AIADMK) সরকার রাজীব হত্যার দোষীদের মুক্তির সুপারিশ করে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটা খারিজ করে দেন। এরপর দোষীরা মুক্তি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়। সুপ্রিম কোর্ট তামিলনাড়ু সরকারের সেই সুপারিশের কথাও এদিনের রায়ে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট।
৩৩ বছর পর ছাড়া পেয়ে রাজীব হত্যার অন্যতম অভিযুক্ত নলিনী বলে, ‘আমি জঙ্গি নই।’ শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কংগ্রেস। হাত শিবির পরিস্কার ভাবে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে খারিজ করে দিয়েছে। কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ (Jairam Ramesh) বিবৃতি জারি করে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের এই রায় গ্রহণযোগ্য নয়। এটা ভারত বিরোধী।’